বাংলাদেশের অস্থির আবহের মধ্যে ত্রিপুরাকে করিডোর করছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিরা।
কিভাবে একজন আন্তর্জাতিক জঙ্গি আগরতলার ঠিকানায় হাতিয়ে নিয়েছিল ভারতীয় নাগরিকত্ব কার্ড এবং পাসপোর্ট? কারা জড়িত ছিলো ঘটনার সঙ্গে? তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য ছিলো এই সমস্ত রহস্যের উদঘাটন করা।কিন্তু দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যি, আজ পর্যন্ত তদন্ত রিপোর্ট ধুলোতে গড়াগড়ি খাচ্ছে সদর মহকুমা শাসকের অফিসের মহাফেজ খানায়।
পাক জঙ্গিরা ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে ভারত ভূ-খণ্ডে।
ডেস্ক রিপোর্টার,২জানুয়ারি।। দীর্ঘ ১৭ বছর আগে ত্রিপুরা থেকে ভারতীয় নাগরিকত্ব কার্ড হাতিয়ে নিয়েছিলো আল কায়েদার জঙ্গি আব্দুল রহমান কাইয়ূম। সঙ্গে আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট। তার ভারতীয় নাগরিকত্ব কার্ড ও পাসপোর্টে ঠিকানা ছিল রাজধানীর লক্ষীনারায়ণ বাড়ি রোড এলাকার ।আব্দুল রহমান কাইয়ূম ছিলো হায়দ্রাবাদ মক্কা মসজিদের বিস্ফোরণের নায়ক। কলকাতায় আব্দুল রহমান কাইয়ূম গ্রেফতার হওয়ার পর লাল বাজার থানার পুলিশ এই তথ্য ফাঁস করেছিলো।তারা এসেছিলো ত্রিপুরায়।তল্লাশি করেছিলো সদর এসডিএম অফিসে। সিজ করেছিলো সদর এসডিএম অফিসে জঙ্গি আব্দুল রহমানের জমা করা সমস্ত দস্তাবেজ। এই ঘটনার পর তৎকালীন বাম সরকারের জামানায় গঠন করা হয়েছিল একটি তদন্ত কমিটি।
কিভাবে একজন আন্তর্জাতিক জঙ্গি আগরতলার ঠিকানায় হাতিয়ে নিয়েছিল ভারতীয় নাগরিকত্ব কার্ড এবং পাসপোর্ট? কারা জড়িত ছিলো ঘটনার সঙ্গে? তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য ছিলো এই সমস্ত রহস্যের উদঘাটন করা।কিন্তু দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যি, আজ পর্যন্ত সদর এসডিএম অফিস তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনে নি।এবং এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কুশীলবদের সনাক্ত করে আইনের কাঠ গড়ায় নেয় নি। কার স্বার্থে আজ পর্যন্ত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট চেপে রেখেছে সদর এসডিএম অফিস কর্তৃপক্ষ?
বাংলাদেশের অস্থির আবহের মধ্যে ত্রিপুরাকে করিডোর করছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিরা।পাক জঙ্গিরা ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে ভারত ভূ-খণ্ডে। এই তথ্য দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার। একই অবস্থা অসম, মেঘালয় ও পশ্চিম বাংলার ক্ষেত্রেও। নিঃসন্দেহে এই বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর।
।।বিজ্ঞাপন।।
ধৃত জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ সূত্র রয়েছে বিশ্ব ত্রাস জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা ও লস্কর-ই-তৈবার।
সম্প্রতি পশ্চিমবাংলার ক্যানিং, মুর্শিদাবাদ, মালদায় ভারতীয় নাগরিকত্ব কার্ড সহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগ সূত্র রয়েছে বিশ্ব ত্রাস জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা ও লস্কর-ই-তৈবার। বাংলার পুলিশ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলি থেকে উদ্ধার করেছে প্রচুর আধার কার্ড। ত্রিপুরার জন্য অবশ্যই এই বিষয়গুলি নতুন কিছু নয়। তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে ২০০৭ সালেই। এবং তার পরেও ত্রিপুরা পুলিশের কাছে উঠে আসেছে এই সংক্রান্ত বহু তথ্য।
তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ জুন মাসেই হায়দ্রাবাদ মক্কা মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল আল কায়েদার জঙ্গি আব্দুর রহমান কাইয়ুম। বিস্ফোরণের আগে আব্দুল রহমান আগরতলাতে অবস্থান করেছিলো। মূলত সে ছিল পাকিস্তানি নাগরিক। বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছিল আগরতলায়। শহরের বর্ডার গোল চক্কর এলাকায় অবস্থান করে ভারতীয় নাগরিকত্ব কার্ড পিআরটিসি ও পাসপোর্ট হাতিয়ে নিয়েছিল আব্দুল।
।।আব্দুল রহমান।।
পিআরটিসি’ র তার জমা করা সব দস্তাবেজ ছিল জাল। পিআরটিসির জন্য আব্দুর রহমান কাইয়ুমের জমা করা স্কুল সার্টিফিকেটটি ছিলো ” গান্ধীগ্রাম স্কুলের”। অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ স্কুল সার্টিফিকেট জমা করেছিল আব্দুল। সে যে বছরে অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ স্কুল সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিল, বাস্তব অর্থে তখন গন্ধিগ্রাম স্কুলটি ছিল পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। অর্থাৎ সদর এসডিএম অফিসে জমা করা এই দস্তাবেজটি ছিলো জাল।
তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন টিসিএস অফিসার তমাল মজুমদার।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর চক্রের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে তৎকালীন সময়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সদর এসডিএম অফিস কর্তৃপক্ষ। এই সময় সদরে এসডিএম ছিলেন টিসিএস দুলাল দাস। তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন টিসিএস অফিসার তমাল মজুমদার। কিন্তু তদন্ত কমিটির রিপোর্টে কি ছিল? কারা জড়িত ছিল? দীর্ঘ দেড় দশকের অধিক সময় পর তা আজও অধরা। এই প্রশ্নের উত্তর কি দিতে পারবেন সদর মহকুমা প্রশাসন?