ডেস্ক রিপোর্টার, ১জুন।।

                     টানা দুইদিনের অতি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত রাজ্যের জনজীবন। ধর্মনগর থেকে সাব্রুম সর্বত্র একই অবস্থা। বহু মানুষ জল বন্দী।তাদের উদ্ধারকার্য চলছে এখনো।আগরতলা সহ রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবির। বন্যা কবলিত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে ত্রাণ শিবিরে। আগরতলার ত্রাণ শিবিরগুলি পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন প্রদেশ বিজেপির সভাপতি তথা রাজ্য সভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য। প্রশাসনিক আধিকারিকরাও ব্যস্ত ত্রাণ শিবির গুলির দেখাশুনা নিয়ে। আবহাওয়া দপ্তরের খবর অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আরো বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি জেলাতে জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা।

।বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজধানীর হাওড়া নদীর জল ইতিমধ্যে বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে।প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীর আশপাশে থাকা লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।মূল শহরের বহু জায়গা এখনো জল মগ্ন। শহরের প্রাণ কেন্দ্রে থাকা ২৪টি পাম্প মেশিন ২৪ ঘণ্টা সক্রিয়।তারপরও জল সরতে ব্যয় হচ্ছে সময়।কারণ উজানের জল চাপ বাড়াচ্ছে।ফলে ফুলে হাওড়া।শহরে থাকা ত্রাণ শিবির গুলি নিয়েও নানান অভিযোগ শরণার্থীদের। তারা সরাসরি অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।

।হাওড়ার জলস্তর ঊর্ধ্বমুখী।

রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতে ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুত পরিষেবা। কারণ ঝড়ো হাওয়াতে ভূ – পতিত হয়েছে বড় বড় গাছ – গাছালি। ছিঁড়ে পড়ে গিয়েছে বিদ্যুৎ পরিবাহী তার।ফলে প্রভাব পড়েছে যান চলাচলেও। বহু জায়গাতে বন্ধ ছিলো যান চলাচল।গাছ – গাছালি পরিষ্কার করার পর স্বাভাবিক হয় যান চলাচল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা। আগরতলা শহরের অনেক জায়গাতে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার জলের তলে। ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুৎ খুঁটি। সব মিলিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ছন্দ পতন ঘটেছে জন জীবনে। বাঙালির ১৩ পার্বণের মধ্যে  অন্যতম জামাই ষষ্ঠী। অতি বর্ষণে জামাই ষষ্ঠীর হাট- বাজারেও ব্যপক প্রভাব পড়েছে। ব্যবসা – বাণিজ্য মন্দা। দোকানিরা কোনো রকমে ঝাঁপ খুললেও, ক্রেতার দেখা নেই।

।রাজধানী আগরতলায় চলছে উদ্ধারকার্য।

শনিবার বৃষ্টির জলে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে শহরের প্রাণ কেন্দ্রের জ্যাকসান গেটে। গোটা রাজ্যের কৃষকরাও ব্যপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মরশুমি ফসল জলের তলায়। তাতে মাথায় হাত কৃষকদের। তারা দাবী করছে সরকারি সাহায্যের। আসাম – আগরতলা জাতীয় সড়কের বহু জায়গা জলের তলায়।স্বাভাবিক ভাবেই সংশ্লিষ্ট সড়কে বন্ধ যান চলাচল। তাতে সমস্যায় পড়েছেন নিত্য যাত্রীরা। রাস্তার দুইপাশে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে দূরপাল্লার লরি সহ অন্যান্য গাড়ি। রবিবার সন্ধ্যায় গোটা রাজ্যের বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মহাকরণে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পাণ্ডে। সঙ্গে ছিলেন পশ্চিম জেলার জেলাশাসক বিশাল কুমার।

রবিবার সন্ধ্যায় গোটা রাজ্যের বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মহাকরণে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পাণ্ডে।

মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ” ক্রমাগত বর্ষণে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে পশ্চিম জেলার বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হওয়ায় নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সর্বত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছে। ” 

     এদিন তিনি  আগরতলার হাওড়া নদীর উপকুলবর্তী চন্দ্রপুর,প্রতাপগড়,বড়দোয়ালী সহ বিভিন্ন প্লাবিত অঞ্চল পরিদর্শন করেন। তাছাড়া শহরের স্বামী দয়ালানন্দ বিদ্যানিকেতন(ধলেশ্বর),রামঠাকুর পাঠশালা উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (প্রতাপগড়),বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির(বড়দোয়ালী ),বি.আর আম্বেদকর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়(জয়নগর),প্রগতি বিদ্যাভবন(কৃষ্ণনগর), মহারাণী তুলসিবতী বালিকা বিদ্যালয়, নেতাজী আদর্শ শিক্ষা মন্দির,৩২ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রাণ শিবির গুলি পরিদর্শন করেন। কথা বলেন শিবিরে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের সঙ্গে। এবং খতিয়ে দেখেন শিবিরের সার্বিক ব্যবস্থাপনা।

#tripura #flood #CM #Dr #Manik #Saha #JM


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *