কৈলাসহর ডেস্ক, ১জুন।।
কয়েকদিনের লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কৈলাসহরের গ্রাম এবং শহরের অনেক অঞ্চল প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় প্রায় সাতশো পরিবার শেল্টার হাউসে আশ্রয় নিয়েছে। মনু নদীর জলস্তর শনিবারের রাত থেকে বৃদ্ধি পেলেও রোববার দুপুরে নদীর জলস্তর আর বৃদ্ধি পায় নি বলে জানান কৈলাসহরের মহকুমা শাসক প্রদীপ সরকার। তবে,শনিবারের রাতভর বৃষ্টির পর জনপ্রতিনিধি সহ মহকুমা প্রশাসনের একটি প্রতিনিধি টিম গোটা কৈলাসহর মহকুমায় চষে বেড়াচ্ছেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন কৈলাসহর পুর পরিসদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায়, কৈলাসহরের মহকুমাশাসক প্রদীপ সরকার, কৈলাসহর পুর পরিসদের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ অফিসার হেমন্ত ধর, ডেপুটি মেজিস্ট্রেট রাজিব দত্ত, ঊনকোটি জেলার বরিস্ট আইনজীবী সন্দীপ দেবরায় এনডিআরএফের প্রথম ব্যাটেলিয়নের আধিকারিক মনদ্বীপ মল্লিক সহ আরও অন্যান্য আধিকারিকরা।

শনিবার শেষ রাতের দিকে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কৈলাসহর মহকুমার ইছবপুর, পাখিরবাদা, কিনাইরচড়, হাকতা পাড়া, দুর্গানগর, গোলধারপুর, জলাই, কাউলিকুড়া, ভগবান নগর, গৌরনগর, লাটিয়াপুড়া, নুরপুর সহ আরও অন্যান্য জায়গায় বাড়ি ঘর সহ কৃষি জমি জলমগ্ন হয়ে যায়। বাড়ি ঘরের মানুষরা সেল্টার হাউসে রোববার সকাল থেকেই আশ্রয় নিতে শুরু করে। কৈলাসহরের রামকৃষ্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গোবিন্দপুর উচ্চ বুনিয়াদি বিদ্যালয়, নেতাজী বিদ্যাপীট ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল, পাখিরবাদার তরুচ্ছায়া ক্লাব ঘর, পাখিরবাদা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, নুরপুর জেবি স্কুল, গোলধারপুর হাই স্কুল এই সাতটি সেল্টার হাউসে মানুষজন আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। তবে, অনেক ক্ষেত্রেই এনডিআরএফের কর্মীরা জলমগ্ন বাড়ি ঘর থেকে মানুষজনকে উদ্ধার করে সেল্টার হাউসে এনেছে। রোববার সকালে দূর্গানগর এলাকায় ছয়জন মহিলা, তিনজন পুরুষ এবং দুইজন শিশুকে উদ্ধার করে গোলধারপুর হাই স্কুলের শেল্টার হাউসে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান এনডিআরএফের প্রথম ব্যাটেলিয়নের আধিকারিক মনদ্বীপ মল্লিক।

তাছাড়া কৈলাসহর মহকুমার বন্যার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে ঊনকোটি জেলার বরিষ্ঠ আইনজীবী সন্দীপ দেবরায় বলেন মহকুমা শাসক প্রদীপ সরকার সহ মহকুমা প্রশাসনের টিম বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলছেন এবং তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। রোববার দুপুরে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শহরের জল কমে যাওয়াতে শহরবাসীরা নিরাপদ থাকলে সন্ধ্যায় মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে ফের প্রশাসনিক টিমটি পুনরায় বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সবার খোঁজ খবর নেবেন বলেও জানান সন্দীপ দেবরায় ।

গোটা কৈলাসহর মহকুমার চিত্র সম্পর্কে বলতে গিয়ে মহকুমা শাসক প্রদীপ সরকার জানান, কৈলাসহরের সাতটি সেল্টার হাউসে বিকাল পাঁচটা অব্দি সাতশো পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তবে এই সংখ্যাটা সন্ধ্যার পর আরও বাড়তে পারে বলেও জানান। সেল্টার হাউসে প্রত্যেককে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকালে টিফিন এবং দুপুরে ভাত খাওয়ানো হয়েছে। সন্ধ্যায় টিফিন এবং রাতে তাদেরকে ভাত খাওয়ানো হবে বলেও জানান। দুপুর থেকে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শহরে জমা জল কমতে শুরু করেছে এবং মনু নদীর জল দুপুর থেকে আর বাড়েনি বলেও জানান। তবে সাতটি সেল্টার হাউসে মানুষজন আসলেও গোটা কৈলাসহর মহকুমায় মোট ৩৬টি সেল্টার হাউস রেডি করে রাখা হয়েছে বলেও জানান।মহকুমাশাসক প্রদীপ সরকার ।
Tripura #Kls #Flood #Manu #River #JM