ডেস্ক রিপোর্টার,২৭মার্চ।।
রাজ্য রাজনীতিতে প্রদ্যুৎ কিশোর মগর মাছ। তার রাজনৈতিক পাশা খেলা বুঝতেই পারছেন না বাম – কংগ্রেসের ঝানু নেতারা। প্রদ্যুৎ বাম – কংগ্রেস নেতৃত্বের চোখে ভুলভুলাইয়া(গোলক ধাঁধা) লাগিয়ে বিজেপির সঙ্গে সমান্তরাল সম্পর্ক রেখে চলেছিলেন।কিন্তু উপর দিয়ে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে করেছিলেন হাকুম-বাকুম। প্রদ্যুৎ কিশোরের এই রাজনৈতিক খেলা ঠাহর পারেন নি বাম – কংগ্রেস শিবির।
২৩- র মহা যুদ্ধের শুরু থেকেই প্রদ্যুৎ কিশোর বিজেপি,কংগ্রেস ও সিপিআইএমকে লেগে খেলিয়েছেন। বাম – কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি জোটের কথা না বললেও বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনিও থাকবেন পাশে। বহু বার এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল প্রদ্যুৎ বাম – কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়েই লড়বেন ভোটে।আবার পরক্ষণেই কিঞ্চিৎ ঝুঁকে যান বিজেপির দিকে। বেশ কিছুদিন এই টাল বাহানার পর প্রদ্যুৎ একাই নির্বাচনে লড়াই করেন। এবং পাহাড় থেকে ১৩তি আসন দখল করেন। নিজে ১৩টি আসন পেলেও ১৭টি আসনে বামেদের আটকে দিয়ে বিজেপির জয় নিশ্চিত করেছিলেন। ভোটের পরিসংখ্যান থেকেই তা স্পষ্ট। আবার নির্বাচনে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাব্রুম কেন্দ্রে প্রার্থী না দিয়ে বামেদের বিশ্বাস অর্জন করেছিলো।
নির্বাচনের পরেও প্রদ্যুৎ বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে বাম – কংগ্রেসের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে ছিলেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ নির্বাচনে জোটের প্রার্থীর গোপাল রায়ের সঙ্গে ছিলো মথা। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এক ফোনের পরেই প্রদ্যুতের বিধায়করা অধ্যক্ষ নির্বাচন থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন। তারা ভোট দেয় নি। প্রদ্যুৎ কিশোরের এই সিদ্ধান্তে প্রমাণ হয়ে যায় প্রদ্যুতের মিত্র শক্তির তালিকায় নেই বাম – কংগ্রেস। বিজেপিই প্রদ্যুৎ কিশোরের রাজনৈতিক মিত্র শক্তি। অমিত শাহের ফোনে প্রদ্যুৎ উদ্বুদ্ধ হয়ে ছুটে গিয়েছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দরবারে।
রাজনীতিকরা বলছেন, প্রদ্যুৎ এখন গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের পরিবর্তে সাংবিধানিক সমাধান নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে। কিন্তু এই সাংবিধানিক সমাধান সম্পর্কে একে বারেই অজ্ঞ জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ। সাংবিধানিক সমাধান নানান ভাবে, নানান বিষয়ে হতে পারে। এটা নিশ্চিত ত্রিপুরায় গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড হচ্ছে না।
তবে প্রদ্যুৎ বাম – কংগ্রেসের চোখে ভুলভুলাইয়া লাগালেও জিতেন্দ্র, মানিক বীরজিত, সুদীপরা তা বুঝতেই পারেন নি। এই জন্যই বাম – কংগ্রেস নেতৃত্বের চোখে গোলক ধাঁধা দেখিয়ে প্রদ্যুৎ এখন বিজেপিকে নিশ্চিন্তে শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। প্রদ্যুৎ কিশোরের বর্তমান কাজ কর্ম দেখে এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক প্রাজ্ঞরা।