*২০কিমি সড়ক * বরাদ্দ ২শত২০কোটি
* ব্যবহৃত হচ্ছে রাজ্যের পাথর
* কম হচ্ছে সড়কের ‘বেধ’
*নির্মাণে পাহাড় সমান দুর্নীতি
ডেস্ক রিপোর্টার,১৩জুলাই,
কাঞ্চনপুর থেকে জম্পুই হিল।দীর্ঘ ২০কিলোমিটার পথ। এই সড়ক নির্মাণের বরাত পেয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড বা এনএইচআইডিসিএল।মূলত রাজ্যের পর্যটন শিল্পের মান উন্নয়নের জন্যই এই সড়ক নির্মাণ করছে রাজ্য সরকার।সড়ক নির্মাণে মোট ব্যায় ধরা হয়েছে ২শত ২০কোটি টাকা। অভিযোগ রাজ্য সরকারের এই স্বপ্নের সড়ক নির্মাণে চলছে সীমাহীন দুর্নীতি। কোনো নিয়ম নীতিকে মান্যতা দিচ্ছে না নির্মাণ সংস্থা এনএইচআইডিসিএল। নির্মাণস্থলে কান পাতলেই শোনা যায় এই সংক্রান্ত পাহাড় সমান দুর্নীতির খবর।
কেন্দ্রীয় নির্মাণ সংস্থা
এনএইচআইডিসিএল কাঞ্চনপুর অফিস তৈরি করেছে।এই অফিস থেকেই সংস্থার কাজ কর্ম পরিচালিত হয়। কিন্তু এনএইচআইডিসিএল কাজ করলেও রাজ্য সরকারের পূর্ত দপ্তর আছে তদারকির দায়িত্বে। অথচ কালেভদ্রেও পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পা মাড়াতে দেখা যায় নি। অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের।স্বাভাবিক ভাবেই পূর্ত দপ্তরের বিনা তদারকির কারণে নিম্ন মানের কাজ কড়ছে কেন্দ্রীয় নির্মান সংস্থা এনএইচআইডিসিএল।
বিশেষজ্ঞ বাস্তুকররা বলছেন নিয়ম অনুযায়ী,কাঞ্চনপুর থেকে জম্পুই এই সড়ক তিনটি স্তরে নির্মাণ করতে হবে।কিন্তু দেখা যাচ্ছে নির্মাণ সংস্থা সড়কের মাত্র দুইটি স্তর করেছে।প্রতিটি স্তর নির্মাণের পর ঢালাই দেওয়া বাধ্যতামূলক।এক্ষেত্রে রাস্তার প্রথম স্তরে কোনো ঢালাই দেওয়া হয় নি।দ্বিতীয় স্তর নির্মাণ করেই ফাইনাল টাচ দিচ্ছে নির্মাণ সংস্থা।এরফলে রাস্তার ‘থিকনেস’ বা ‘বেধ’ নিয়ম থেকে কম হচ্ছে। অর্থাৎ এক স্তর কাজ না করেই রাস্তা নির্মান শেষ করে ফেলছে। একই অভিযোগ বাসিন্দাদের।
রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে পাথর।পাথর আনার কথা বহিঃ রাজ্য থেকে।কিন্তু নির্মাণ সংস্থা তাও করছে না।জম্পুই পাহাড়ে থাকা পাথর ব্যাবহার করছে রাস্তা নির্মাণে।কিন্তু রাজ্যে পাথর কাজের জন্য উপযুক্ত নয়। এই পাথর ব্যবহার করে নির্মাণ কাজ করার বৈধতাও দেওয়া হয়নি।তা পরীক্ষিতও।এই কারণেই প্রতিদিন বাংলাদেশ ও বহিঃ রাজ্য থেকে পাথর প্রবেশ করছে রাজ্যে।
নির্মাণ সংস্থা এনএইচআইডিসিএল জম্পুই হিলের পাথর ব্যবহার করছে বে-আইনি ভাবে ভাবে।কেননা, রাজ্যের এই পাথর বন দপ্তরের সম্পদ।পাথর ব্যবহার করতে হলে বন দপ্তরের অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু কোথায়? বন দপ্তরের বিনা অনুমতিতে রাজ্যের সম্পদ বিনা মূল্যে ব্যবহার করছে কেন্দ্রীয় নির্মাণ সংস্থা
এনএইচআইডিসিএল।পূর্ত দপ্তর ও বন দপ্তর কাউর কোনো হেলদোল নেই।
নির্মাণ সংস্থার আধিকারিকরা জানিয়েছেন,”তারা পাথর এনেছেন মিজোরাম থেকে।” কিন্তু জম্পুইয়ের ত্রিপুরা-মিজোরাম গেটে খবর নিয়ে জানা গেছে মিজোরাম থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পাথর রাজ্যে আসেনি।তাতেই দুর্নীতি জলের মত আরো পরিষ্কার হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যায় ধরা হয়েছে ২শত২০ কোটি টাকা। প্রতি কিলোমিটার রাস্তার জন্য ব্যয় হচ্ছে ১১কোটি টাকা। কোথায়ও পাহাড় কেটে তৈরি হচ্ছে রাস্তা। সব মিলিয়ে সড়ক নির্মাণের নামে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনএইচআইডিসিএল রাজ্যের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেছে।অথচ শীত ঘুমে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।বাম জামানায় একই কায়দায় বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থা নিম্নমানের কাজ করে হয়েছিলো পাগার পাড়।এবারও তাহলে ব্যতিক্রম হবে না।এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে কাঞ্চনপুর-জম্পুই-র মধ্যে নির্মাণ কাজ চলতে থাকা ২০কিলোমিটার রাস্তায়।