ডেস্ক রিপোর্টার, ২৮এপ্রিল।।
         রাজ্য রাজনীতির দীর্ঘ ৩৫ বছরের ইতিহাস স্পর্শ করলেন ভারতীয় জনতা পার্টির পূর্ব আসনের প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মণ। দেশের প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মোহন দেবের সঙ্গে উঠে এলেন এক মঞ্চে। তবে সন্তোষ মোহন দেব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন লোকসভার পশ্চিম আসন থেকে। এবং জাতীয় কংগ্রেসের টিকিটে।
     ১৯৫২ থেকে ২০২৪। লোকসভা নির্বাচনের ইতিহাসে সন্তোষ মোহন দেব ও কৃতি সিং স্থানীয় ভোটার না হয়েও তারা  লড়াই করেছেন নির্বাচনে। তারা উভয়েই এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তবে রাজনৈতিক দল পৃথক। সন্তোষ মোহন দেব কংগ্রেস। এবং কৃতি সিং বিজেপি।


রাজ্যের ভোটার না হয়েও লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। এবং সাংসদ হওয়ার কৃতিত্ব ছিলো কংগ্রেস নেতা সন্তোষ মোহন দেবের।তিনি ছিলেন কেন্দ্রের হেভিওয়েট পূর্ন মন্ত্রীও। সন্তোষ মোহন দেব ১৯৮৯ ও ১৯৯১ সালে পর পর দুইটি লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম আসন থেকে কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু তিনি ত্রিপুরার ভোটার ছিলেন না। মূলত সন্তোষ মোহন দেব ছিলেন অসমের শিলচরের বাসিন্দা। তিনি সেই রাজ্যের ভোটার।


২০২৪- র লোকসভা নির্বাচনে সন্তোষ মোহনের সঙ্গে একই সারিতে চলে এসেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী কৃতি সিং। তিনিও ত্রিপুরার ভোটার নন। তারপরও লড়াই করেছেন নির্বাচনে। তবে সন্তোষ মোহনের সঙ্গে কৃতি সিংয়ের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।কৃতি রাজ্যের মেয়ে।তিনি বিবাহ সূত্রে থাকেন ছত্রিশগড়ে। এবং সেই রাজ্যের ভোটার। কৃতি সিং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন পূর্ব ত্রিপুরা আসন থেকে। রাজ্যের মেয়ে হলেই তিনি শৈশব থেকেই ছিলেন রাজ্যের বাইরে। বিবাহ হয়েছে ভিন রাজ্যে। সব মিলিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কৃতি সিংয়ের নারীর টান কতটা? এটা সবাই জানেন।কৃতি নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদে যাবেন কিনা, তারজন্য অপেক্ষা করতে হবে আরোও কিছুটা দিন। তবে ভোটের গতি প্রক্রিয়া কৃতির পক্ষে বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা।


রাজ্য রাজনীতির লোকসভা নির্বাচনের ইতিহাসের পাতা ঘাটলে দেখা যায়, পশ্চিম ত্রিপুরা আসনে সন্তোষ মোহন দেব ব্যতীত বাদবাকী সব সাংসদ-ই ছিলেন রাজ্যের ভোটার।  এতো দিন পূর্ব ত্রিপুরা আসনের সব সাংসদ-ই ছিলেন স্থানীয় ভোটার।২৪- এ এসে ঘটেছে ছন্দ পতন। স্থানীয় ভোটার না হয়েও কৃতি সিং পূর্ব আসন থেকে করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ভোটে জয়ী হলে হবেন সাংসদ।


সন্তোষ মোহন দেব ত্রিপুরা থেকে জয়ী হয়ে সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন। রাজ্যের জন্য কি করেছিলেন সন্তোষ মোহন দেব? এই তথ্য কি দিতে পারবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে অবশ্যই আজকের দিনে কংগ্রেসের মিত্র শক্তি সিপিআইএমের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কি বলবেন মানিক সরকার – জিতেন্দ্র চৌধুরীরা। বরাবর সিপিআইএম নেতৃত্ব সন্তোষ মোহনকে নিয়ে সন্ত্রাসের ক্যাসেট বাজাতেন।

সন্তোষ মোহনকে বামেরা সন্ত্রাস মোহন হিসাবে অভিহিত করতেন। সন্তোষ মোহনের হাত ধরেই নাকি রাজ্য রাজনীতিতে “সন্ত্রাসের” জন্ম নিয়েছিল। আর এই সন্তোষ মোহন দেব প্রতারণা করেছেন ত্রিপুরার মানুষের সঙ্গে।বলতেন সিপিআইএম নেতারা। মেলারমাঠের লাল বাড়ির নেতাদের বক্তব্য ছিলো, “
            “ত্রিপুরার নামে বরাদ্দ হওয়া কাগজের মিল সন্তোষ মোহন কাছাড়ে নিয়ে যায়। এক্ষেত্রেও সন্তোষ মোহন দেব ত্রিপুরার মানুষের সঙ্গে ঠকাইয়ের রাজনীতি করেছেন। সন্তোষ মোহন দেবকে নিয়ে রাজ্যের বাম নেতাদের এই ক্যাসেট সর্বজন বিদিত।


এখন পালা কৃতি সিংয়ের। তিনি ভোটে জয়ী হলে সাংসদ হয়ে রাজ্যের জন্য কি করবেন? তিনি কি ভাই প্রদ্যুতের বড় মুখ রাখতে পারবেন? কি – ই করবেন জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য? উঠছে প্রশ্ন।কৃতি সিংয়ের বাবা কিরিট বিক্রম ও মা বিভু কুমারী দেবীও সাংসদ ছিলেন। তারা কি করেছিলেন জনজাতিদের  জন্য?এই সংক্রান্ত রিপোর্ট কার্ড এখনো জন সন্মুখে আনতে পারে নি স্ব – ঘোষিত রাজা প্রদ্যুৎ কিশোর। সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে সময়েই।
           দেশের সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যসভা বা লোকসভা নির্বাচনে স্থানীয় ভোটার না হলেও প্রার্থীরা লড়াই করতে পারেন। তাতে কোনো নিয়মের কোনও বাধা নেই। প্রয়োজন শুধু সাংসদের মানুষের জন্য কাজ করার সদিচ্ছা।


   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *