ডেস্ক রিপোর্টার,৮মার্চ।।
রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন ও সাধারণ প্রশাসনকে কার্যত ঘুমে রেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার সাব্রুম সীমান্ত সফর করেছেন। এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যে পৌছার পরও রাজ্য প্রশাসনের কাছে এই সংক্রান্ত কোনো খবর ছিলো না। প্রশাসনের কাছে খবর ছিলো অমিত শাহ রাজ্যে এসে যাবেন উদয়পুর মাতা বাড়িতে।সেখান থেকে আসবেন আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামে।এরপর যাবেন জারুল বাছাইয়ে।
কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ সাব্রুমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়ে বিএসএফের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে যায়।তখন পর্যন্ত রাজ্য পুলিশের সদর দপ্তরে কোনো খবর ছিলো না।এরপর অবশ্যই বিএসএফের পক্ষ থেকে ত্রিপুরা পুলিশকে বার্তা দেওয়া হয়।সঙ্গে সঙ্গে গোটা সাব্রুম শহর নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলা হয়। জরুরী তলবে মোতায়েন করা হয় টিএসআর।কাজে লাগানো হয় সাদা পোশাকের পুলিশ। তখন ব্যস্ততা বেড়ে যায় মহকুমা প্রশাসনের।
সাব্রুম সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে বিএসএফের কপ্টার চক্কর কাটতে শুরু করে সাব্রুম শহর লাগোয়া কাঁঠালছড়ি সীমান্তে। মুহূর্তেই সাব্রুম শহর সহ গোটা সীমান্ত এলাকা ছয়লাপ হয়ে যায় পুলিশ-টিএসআর ও বিএসএফে।
শেষ পর্যন্ত রাজ্য প্রশাসন জানায় দুপুর ২টা ৪২মিনিটে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কপ্টার আগরতলা আসম রাইফেলস মাঠ থেকে রওয়ানা হবে সাব্রুমের উদ্দেশ্যে।সঙ্গে থাকবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সহ প্রদেশ বিজেপি’র প্রভারী তথা সাংসদ বিনোদ শোনকর। যথারীতি বিকাল ৩টা ৫মিনিটে সাব্রুমে অবতরণ করে অমিত শাহের কপ্টার।সেখান থেকে গাড়িতে করে কাঁঠালছড়ি সীমান্তে পৌঁছান অমিত শাহ। সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের অস্থায়ী তাঁবুতে বসেন তিনি।সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের ডিজি, ডিআইজি সহ পদস্থ আধিকারিকরা।
কাঁঠালছড়ি তাঁবুতে বসে বিএসএফ আধিকারিকরা ম্যাপ দেখিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবগত করেন সীমান্তের কোনো কোনো জায়গাতে এখনো কাঁটাতারের কাজ সম্পন্ন হয়নি।অর্থাৎ সনাক্তকৃত উন্মুক্ত সীমান্তের চিত্র বিএসএফ তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে।এই বৈঠকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।এরপর সীমান্ত পরিদর্শনে বের হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।ফেনী নদী লাগোয়া অঞ্চলে দাঁড়িয়ে সীমান্তের কাজ পরখ করেন অমিত শাহ। সীমান্ত পিলার ২২১৬ নম্বর এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি।গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা তদারকি করে বিএসএফের ৯৬নম্বর ব্যাটেলিয়ন।
বিএসএফ সূত্রের খবর, “সীমান্তের অসম্পূর্ণ কাঁটাতারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।” কারণ সাব্রুম হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের হাব। এই সীমান্ত শহরে কোনো ভাবেই যেন নিরাপত্তার ঝুঁকি না থাকে তার নিশ্চিত করা ভারত সরকারের প্রধান কাজ।তাছাড়া ফেনী নদী লাগোয়া সীমান্তে কাঁটাতার নির্মাণে বার বার বাধা প্রধান করেছে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি। সীমান্তে কাঁটাতার নির্মাণের ঝামেলা নিয়ে কয়েক বছর আগে বিএসএফ-বিজিবি’র মধ্যে গুলাগুলিও হয়েছিলো। সীমান্ত সূত্রের দাবি,এই জন্যই নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাব্রুম সফর প্রাথমিক ভাবে গোপন রেখেছিলো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সহ বিএসএফ।তারা অমিত শাহের সাব্রুম সফর সম্পর্কে গুণাক্ষরেও জানতে দেয়নি রাজ্য প্রশাসনকে। এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।। প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাব্রুম সফর নিয়ে একমাত্র “জনতার মশাল” সর্ব প্রথম “ব্রেকিং নিউজ” সম্প্রচার করেছিলো।তখন রাজ্য প্রশাসনের একাংশ এই খবরকে ভুয়ো বলে দাবি করেছিলো।তাদের বক্তব্য ছিলো অমিত শাহের এমন কোনো সফর নেই।সাব্রুমে বিএসএফের ডিজি স্তরের বৈঠক হবে।কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের দেওয়া বার্তা ভুল বলে প্রমাণিত হয়।এবং আক্ষরিক অর্থে জয় হয় “জনতার মশাল”র। এই নিউজ পোর্টালের কাছে বিএসএফ সূত্রে খবর ছিলো অমিত শাহের সাব্রুম সফর নিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *