রাজ্য আরক্ষা দপ্তরের স্বচ্ছতা আর গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ “পদোন্নতি”।এই পদোন্নতির ফলে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে অরক্ষাকর্মীরা তাদের কর্তব্য পালন করে যাবে। এটাই প্রত্যাশিত। রাজ্য অরক্ষা দপ্তরে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রমোশন নিয়ে বইতে ক্ষোভের চোরা স্রোত। অবশেষে চোরা স্রোতে দাড়ি টানলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।

রাজ্যে টানা ২৫ বছরের বাম জামানায় প্রমোশন নিয়ে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের জন্ম নিয়েছিলো।২৫-৩০ বছর চাকরি করেও ভাগ্যে জুটেনি একটি প্রমোশন।স্বাভাবিক ভাবে যন্ত্রনায় চটপট করতো পুলিশ কর্মীদের মন।কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলার সাহস পায়নি পুলিশ কর্মীরা। তারা কর্তব্য পালনে ছিলো নিষ্ঠাবান।রাজ্যের শহর থেকে সমতল এবং গ্রাম থেকে পাহাড়,সব জায়গাতেই পালন করেছিল নিরাপত্তার দায়িত্ব।

শেষ পর্যন্ত রাজ্য পুলিশের প্রাণ ভোমরা ‘সাব-ইন্সপেক্টর’দের মুখে হাসি ফাটালেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। অরক্ষা দপ্তরের ২২গজে মুখ্যমন্ত্রীর স্টেট ড্রাইভে বল গিয়ে আছড়ে পড়ে বাউন্ডারির বাইরে। এবং হয় সমস্ত ক্ষোভ বিক্ষোভের আবাসন।

রাজ্য পুলিশের ইতিহাসে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।তিনি এক সঙ্গে রাজ্যের ১৭১জন সাব- ইন্সপেক্টরকে ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি দিয়েছেন।রাজ্য পুলিশের ডিজিপি ভি এস যাদব মঙ্গলবার এই প্রমোশনের তালিকায় স্বাক্ষর করেন।

১৯৯৩ সালে কংগ্রেস-টিইউজেএস জোট সরকারের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বাম সরকার। বাম সরকার ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে প্রথম তিনটি অত্যাবশ্যকীয় কারণ গুলির মধ্যে অন্যতম ছিলো তৎকালীন সময়ের’পুলিশ আন্দোলন’। দিল্লি থেকে টেলিফোনে তৎকালীন সময়ের পুলিশ আন্দোলনের নেতা প্রবীর দাস চৌধুরী বলেন,”বাম সরকার ক্ষমতায় এসে পুলিশ কর্মীদের বিশেষ কোনো দাবি মানেনি। আটকে রেখে দেয় প্রমোশন। বিভিন্ন কৌশল করে বাম ঘরানার কিছু অফিসারকে বাঁকা পথে প্রমোশন পাইয়ে দিয়েছিল বাম সরকার।” বর্তমান বিজেপি-আইপিএফটি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান পুলিশ নেতা প্রবীর দাস চৌধুরী।
প্রমোশনের প্রকাশিত তালিকায় রয়েছেন ২৪ মহিলা সাব-ইন্সপেক্টর, ৩৩জন আর্মড ব্রাঞ্চের সাব-ইন্সপেক্টর ও ১১৩জন আনআর্মড ব্রাঞ্চের সাব-ইন্সপেক্টর। এত সংখ্যক পুলিশ সাব ইন্সপেক্টরকে ইন্সপেক্টর হিসাবে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক ও সমপযোগী। ত্রিপুরা ভারতভুক্তির পর অরক্ষা প্রশাসনে এই রকম যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেয়নি কোনো সরকার। স্বাভাবিক কারণেই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে রাজ্যের সমস্ত অরক্ষা কর্মীরা।এর ফলে নিচু স্তরের পুলিশ কর্মীরাও প্রমোশনের আশার কিরণ দেখতে শুরু করেছে।

রাজনীতিকরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের এই প্রমোশনের পেছনে অরক্ষা প্রশাসনকে যেমন আরো গতিশীল করবে,তেমনি রাজনৈতিক লাভালাভও থাকবে। ভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে প্রত্যেক নির্বাচনে পুলিশ কর্মীরা একটা বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।অর্থাৎ সময়ে সময়ে তারাও কাজ করে ভোট যন্ত্রের মত। দেশীয় রাজনীতিতে অরক্ষা কর্মীদের এই ভূমিকা “ওপেন সিক্রেট”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *