রাজ্যে রেল চালুর জন্য বহু মানুষ ঘাম ঝড়িয়েছেন। আছে আন্দোলনের ইতিহাস।তারপরই এই রাজ্যের মানুষ পেয়েছে রেল।হয়েছে স্বপ্ন পূরণ।
কিন্তু এই স্বপ্নের রেল চলতে গিয়ে রাজ্যের মানুষকে পড়তে হচ্ছে সরকারি মাফিয়াদের গ্রাসে। তাদের পোশাকি নাম “ট্রেভেলিং টিকিট এক্সামিনার” অর্থাৎ টি টি। টিটি নামেই এরা রেল যাত্রীদের কাছে পরিচিত। কালো কোর্ট পরিহিত এই টিটি’রা রাজ্যের রেল যাত্রীদের নিয়মিত পকেট কাটছে।অথচ নীরব দর্শক উত্তর-পূর্ব রেলের দণ্ডমুণ্ডের কর্তারা।
টিটিদের দুর্নীতির আতুর ঘর আগরতলা রেল স্টেশন।এরপর চলতি রেলে চলে কালো কোর্টধারী সরকারি দালালদের তোলাবাজি। রেল যাত্রী প্রবীর পাল আক্ষেপ করে বলেন, রেলে এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে টিকিট দেওয়া হয় অন লাইনে। আগরতলা স্টেশনে কাউন্টার খোলা থাকে অল্প সময়। ছোট ছোট স্টেশনেও তো টিকিটিই দেওয়া হয়না। স্বাভাবিক ভাবেই রেল যাত্রীরা সময় মত টিকিট জোগাড় করতে পারেনিন। তাতে বড় সমস্যায় পড়তে হয় যাত্রীদের।
রেল যাত্রী প্রবোধ সুন্দর সাহার বক্তব্য অনুযায়ী, যে সমস্ত যাত্রীরা টিকিট পাচ্ছেন না,তারা উপায় না পেয়ে বিনা টিকিট উঠছেন রেলে।আবার কেউ যোগাযোগ করেন টিটি’র সঙ্গে।এত তাতেই কেল্লা ফতে ভারতীয় রেলের তোলাবাজদের।
রেল যাত্রীরা সরাসরি অভিযোগ করেছেন,টিকিট না পেয়ে টিটিদের কাছে গেলেই তারা পকেট কাটতে শুরু করে। তখন তারা নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দ্বিগুন,কখনো তিন গুণ করে দেন।অথচ তারা যখন স্লিপ দেন তাতে রেল ওয়ের নির্ধারিত ভাড়া লেখা থাকে। এই ভাবে টিটিরা সাধারণ রেল যাত্রীদের পকেট কাটে নিয়মিত। তাদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে কোনো কথা বললেই, রেলের আইনের জুজু দেখতে শুরু করে। ভয়ে সিটিয়ে যান যাত্রীরা।তাছাড়া টিটির সঙ্গে তর্কে জুড়ে গেলে নির্দিষ্ট সময়ে পৌছা যাবে না গন্তব্যে।স্বাভাবিক ভাবেই যাত্রীরা মুখে কুলুপ এটে। রাখেন।
চলতি রেলে টিটিদের “দাদাগিরি” বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ। কোনো যাত্রী টিকিট ছাড়া রেলে উঠলেই টিটির তোলাবাজি আরো বেড়ে যায়। কর্তব্যরত টিটি তখন বাড়িয়ে দেয় তার তোলার প্রানামির পরিমান। যাত্রীরা টিটির চাহিদা অনুযায়ী ভাড়া দিতে না চাইলে তাদেরকে রেল পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দিচ্ছে।পুলিশও নেকড়ে শিয়ালের মত যাত্রীদের রেল থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায়।আগরতলা থেকে ধর্মনগর প্রতিদিন রেলে এই রকম দৃশ্য ঘটছে অহরহ। অভিযোগ নিত্য রেল যাত্রীদের।
রেলে টিটিদের আস্ফালন নিয়ে অতিষ্ঠ যাত্রী সাধারণ। ওয়াকিবহাল উত্তর পূর্ব রেলওয়ে।প্রতিদিন ঘটছে এরকম ঘটনা।তারপরও টনক নড়েনি রেল কর্তৃপক্ষের।তারা মুখে কুলুও এটে রেখেছে।তবে যাত্রীরা তোলাবাজ টিটিদের এই জোরজুলুম বেশি দিন মেনে নেবে না। আগরতলা কেন্দ্রীক নিত্য রেল যাত্রীরা সংগঠিত ভাবে টিটিদের অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিবাদে সরব হবে। চলছে এর প্রস্তুতি।তখন অবশ্যই মুখে কালি ছিটিয়ে পড়বে উত্তর-পূর্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের।
যাত্রীরা মনে করছেন এই বিষয়ে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী প্রনজিত সিংহ রায়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।রাজ্যে বিজেপি সরকার আসীন হওয়ার পরই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের রেল পরিষেবাকে আরো বেশি সমবৃদ্ধ করেছে। রাজ্যের যাত্রীদের প্রতিদিন রেলের কেন্দ্রীয় সরকারের কালো কোর্টধারী মাফিয়ার ঠকাবে, আর সবাই চেয়ে থাকবে তা হয়না।এই ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদি,বিপ্লব কুমার দেবের ডাবল ইঞ্জিনের সুফলের পরিবর্তে কুফলের বিষয়রটি স্পস্ট হচ্ছে।রাজ্যের মানুষকে যদি আক্ষরিক অর্থে ডাবল ইঞ্জিনের সুবিধা পাইয়ে দিতে হয়,তাহলে অতি সত্তর রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রীর হস্তক্ষেপের প্রয়োজন,টিটি তোলাবাজি কমাতে।বলছেন,রেলে যাতায়াত করা রাজ্যের আপামর যাত্রী সাধারণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *