রাজ্যের সবচেয়ে বড় আর্থিক ঘোটালা পূর্ত কেলেঙ্কারি। থানায় কেলেঙ্কারির মামলা রুজু হওয়ার ১৯ মাস পরও আদালতে চার্জশিট জমা করতে পারলো না ক্রাইম ব্রাঞ্চ।চলতি বছরে পূর্ত কেলেঙ্কারির চার্জশিট আদালতে জমা পড়বে কি না তা নিয়ে সন্দিহান খোদ ক্রাইম ব্রাঞ্চের তদন্তকারী আধিকারিকরা।তবে এটা রাজ্য পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের বড় ব্যর্থতা বলা যায়।করোনা পরিস্থিতিতে গোটা মামলার তদন্ত প্রক্রিয়াও এখন অথৈ জলে।
গত বছরের ১৩ অক্টোবর ছয়শ আট ত্রিশ কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকার কেলেঙ্কারির দায়ে প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরীকে মূল অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছিলো ভিজিলেন্স।এই মামলায় অপর দুই অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্য সচিব ওয়াইপি সিং ও প্রাক্তন মুখ্য বাস্তুকার সুনীল ভৌমিক।পুলিশ প্রথমেই গ্রেফতার করে সুনীল ভৌমিককে। এরপর গুরুত্ব বুঝে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া ক্রাইম ব্রাঞ্চকে।এই সময়ের মধ্যে প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরী রহস্য জনক ভাবে পালিয়ে যান।যদিও পরবর্তী সময়ে আই এল এস হাসপাতাল থেকে তাকে গ্রেফতার করে ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ। রাজ্যে প্রাক্তন মুখ্য সচিব ওয়াই পি সিংকে অনেক জল ঘোলার পর উত্তর প্রদেশ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে বাদল চৌধুরী, ওয়াইপি সিং ও সুনীল ভৌমিক তিন জনই আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পায়।
তখন ক্রাইম ব্রাঞ্চ দাবি করেছিল খুব শীঘ্রই তদন্ত শেষ করে আদালতে মামলার চার্জশিট জমা করবে।কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্রাইম ব্রাঞ্চ আদালতে চার্জশিট জমা করতে পারে নি।তাছাড়া উচ্চ আদালত এই মামলা থেকে দুইটি ধারা বাতিল করে দিয়ে গোটা মামলাটিকেই গুরুত্বহীন করে দিয়েছে।
ক্রাইম ব্রাঞ্চের খবর অনুযায়ী, পূর্ত মামলার তদন্তের জন্য ক্রাইম ব্রাঞ্চ বিভিন্ন স্তরের অফিসারদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।এই কমিটিতে আইজি থেকে শুরু করে ইন্সপেক্টর স্তরের অধিকারিকরাও রয়েছেন।তবে এখন পর্যন্ত গোটা তদন্তকারী টিম ব্যর্থ।
রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব দিল্লী, মুম্বাইয়ের আদলে রাজ্যে ক্রাইম ব্রাঞ্চ তৈরি করেছিলেন। উদ্দেশ ছিলো ক্রাইম ব্রাঞ্চের মাধ্যমে রাজ্যে কমানো হবে অপরাধ।মুখ্যমন্ত্রী স্বপ্নের ক্রাইম ব্রাঞ্চ তৈরি করেছেন ঠিকই,কিন্তু এখন পর্যন্ত বড় বড় মামলার রহস্য ভেদ করতে পারেনি ক্রাইম ব্রাঞ্চ। আজ পর্যন্ত রাজ্যের সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি হল পূর্ত ঘোটালা।ক্রাইম ব্রাঞ্চের বাঘা বাঘা অফিসাররা এখনো এই মামলার কোনো কূল কিনারা পাচ্ছেনা।শেষ করতে পারছেন না তদন্ত প্রক্রিয়া।তার মধ্যে কোভিড পরিস্থিতিতে অনেকটাই থমকে আছে আদালতের কার্যকলাপ।
আইন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী, তদন্তকারী পুলিশের তদন্তের ব্যর্থতার জন্য অভিযুক্তরা আইনের মারপ্যাঁচ থেকে প্রাথমিক ভাবে রেহায় পান। তদন্তের শুরুতে ভুল পথে পরিচালিত হয়েছে পুলিশ। এই কারণেই এখন পর্যন্ত মামলার চার্জশিট জমা করতে পারেনি। অভিযুক্তদের প্রথমে পৃথক ভাবে এবং পরে এক সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করেও মামলার তদন্তের নির্যাস উন্মোচন করতে পারেনি স্বপ্নের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। রাজ্যে ক্রাইম ব্রাঞ্চ গঠনের পর আজ পর্যন্ত বড় মামলাগুলির রহস্য উন্মোচনের ক্রাইম ব্রাঞ্চের সাফল্য প্রায় শূন্যের কোটায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *