।।মুন্ডা পরিবারের স্মৃতি জড়ানো কুড়ে ঘর।।

ডেস্ক রিপোর্টার, ৯ ফেব্রুয়ারি।।
       বাংলাদেশে অব্যাহত হিন্দু নির্যাতন। বল পূর্বক হিন্দুর জমি দখল, হিন্দু নারীদের ধর্ষণ, খুন,মারধর। গরীব হিন্দুরা আছেন মহাজনী প্রথার নাগপাশে।  হচ্ছেন সর্বশান্ত।কালের নিয়মের মতোই শেখ হাসিনার দেশে চলছে হিন্দু নিধন যজ্ঞ। কিন্তু নির্বিকার বাংলাদেশ প্রশাসন।
          বাংলাদেশের সাতক্ষীরার উপজেলা রমজান নগর ইউনিয়নের কালিঞ্চী গ্রামের বাসিন্দা সতীশ মুন্ডা। আজ গোটা মুন্ডা পরিবার তাদের পৈতৃক
ভিটা- মাটি ফেলে নিরুদ্দেশ। কোথায় আছেন তারা? কেউ জানেন না। তবে কেন মুন্ডা পরিবার তাদের বহু স্মৃতি জড়ানো ভিটা- মাটি ফেলে চলে গিয়েছেন অজানার উদ্দেশ্যে? এই গল্প অবশ্যই গ্রাম বাংলার সবাই জানেন। কিন্তু প্রতিবাদের ভাষা নেই। কে’ই বা প্রতিবাদ করবেন? প্রতিবাদের আগুনে জ্বললেই যে ধর থেকে গলা আলাদা হয়ে যেতে পারে!এই আতঙ্ক তাড়া করছে পিছু পিছু।


সতীশ মুন্ডার বাবা রঞ্জিত মুন্ডা।তিনি ২০২০ সালে টেংরাখালী গ্রামের সুদখোর মহাজন আনিছুর রহমানের কাছ থেকে ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছিলেন। বিনিময়ে রঞ্জিত মুন্ডা বছরে সুদ বাবদ আনিছুরকে দেন চার হাজার টাকা। জানিয়েছেন, কালিঞ্চী গ্রামের গ্রামবাসীরা।
             সতীশ মুন্ডার প্রতিবেশীদের বক্তব্য, মহাজনী প্রথার নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি মোতাবেক রঞ্জিত মুন্ডা প্রতি বছর  আনিছুরকে সুদের টাকা মিটিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি সুদ খোর মহাজন আনিছুর দাবি করেন, “রঞ্জিত মুন্ডার জমিটি তার।” জমি পরিমাণ  “মাত্র” ১১ কাটা। ভাবুন,আজকের বাজারে এই সম্পত্তির দাম কত?
        সুদখোর মহাজন আনিছুরের মুখ থেকে একথা শুনে মুন্ডা পরিবারের মাথায় ভেঙ্গে পড়ে গোটা আকাশ। শুধু মুখের কথা নয়, জমির কাগজ নিয়ে এসে আনিছুর দ্বারস্থ হয় মুন্ডা বাড়ির  উঠোনে।এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে আনিছুর রহমান প্রমাণ করেন রঞ্জিত মুন্ডার জমিটি এখন তার।


গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সুদে টাকা দেওয়ার সময় আনিছুর সুকৌশলে রঞ্জিত মুন্ডার কাছ থেকে ১৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে টিপ সই নেয় । এবং বন্দোবস্ত জমিটির দলিলও  হাতিয়ে নিয়েছিলেন। ব্যাস, তাতেই কেল্লা ফতে সুদখোর মহাজন আনিছুর রহমানের। আনিছুর এখন রঞ্জিত মুন্ডার ১১কাটা জমি জবর দখল নিয়েছেন। জমিতে শুরু করেছেন পুকুর খনন।


গ্রামবাসীদের কথায়, জমি ছাড়ার জন্য মুন্ডা পরিবারের উদ্দেশ্যে ফতোয়া জারি করেছিলো আনিছুর রহমান। কারণ মুন্ডা পরিবারের সদস্যরা সুদখোর আনিছুরের কথা মানতে চান নি। তখনই আনিছুর তার বাহু বল প্রদর্শন করেন গরীব এই হিন্দু পরিবারের সদস্যদের উপর। ভয়ে তারা বাধ্য হয় পৈতৃক ভিটে মাটি ছেড়ে জীবন নিয়ে পালিয়ে যেতে। মহাজনী কায়দায় আনিছুর রহমানের জমি দখলের বিষয়টি মুন্ডা পরিবার জানিয়ে ছিলো প্রশাসনের কাছে। কিন্তু কোনো সুবিচার পায় নি তারা। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে স্বপ্নের  ভিটে মাটি ছেড়ে কালিঞ্চী গ্রামের বাসিন্দা সতীশ মুন্ডা, তার বৃদ্ধ বাবা রঞ্জিত মুন্ডা , স্ত্রী শেফালী মুন্ডা, মেয়ে স্মৃতি মুন্ডা ও ছেলে অভিজিৎ মুন্ডাকে বেরিয়ে যান আজানার উদ্দেশ্যে। তারা এখন কোথায় আছেন? কি অবস্থায় আছেন? জানেন না গ্রামবাসীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *