ডেস্ক রিপোর্টার,২৫জুলাই:
গোটা দেশে সক্রিয় কয়লা মাফিয়া সিন্ডিকেট। বাংলা এবং ত্রিপুরা সহ গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলেই কয়লা সিন্ডিকেটের চাইরা বিচরণ করছে। উত্তর -পূর্বাঞ্চলে গড়ে উঠা কয়লা মাফিয়াদের সিন্ডিকেট ভাঙতে সক্ষম হয়েছে কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বিজেপি শাসিত রাজ্যের সরকারগুলি। ত্রিপুরায় মাথা চাড়া দিয়ে উঠা কয়লা মাফিয়াদের সিন্ডিকেট ভাঙতেও মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব গত ৯জুন চূড়াইবাড়ি চেকপোস্ট পরিদর্শন করেছিলেন। অভিযোগ,কয়লা সিন্ডিকেটের মাফিয়াদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সরকারি অধিকারিকরাও জড়িত।খবর প্রশাসন সূত্রের। মুখ্যমন্ত্রীর চূড়াইবাড়ি সফরও যথেষ্ট ফলপ্রসূ হয়েছে।কারণ এরপর থেকেই ভেঙে গেছে ”কোল ডন”দের মেরুদন্ড।
রাজ্য সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ত্রিপুরায় ২৩৬টি ইটভাটা রয়েছে।এছাড়া ১৮টি উৎপাদনকারী সংস্থা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানা গুলিতে বছরে ২লক্ষ মেট্রিক টন কয়লার আনা হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে রাজ্যে এতো পরিমান কয়লা রাজ্যে প্রয়োজন নেই।স্বাভাবিক ভাবেই সরকারি তথ্যের সঙ্গে বাস্তব তথ্যের ব্যাপক ফারাক বেরিয়ে আসে।কারণ সরকারি রেকর্ডের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় প্রতি বছর পঞ্চাশ শতাংশের কম কয়লা আসছে রাজ্যে।এরফলে রাজ্যে আসা বড় অংশের কয়লা চালান থেকে কোনো “কর” পাচ্ছে না রাজ্য সরকার।
রাজ্যের আয় কর দপ্তরের কমিশনার ডাঃ বিশাল কুমার সৈয়দ জানিয়েছেন, “রাজ্যের আসা মোট কয়লার চালানের পঞ্চাশ শতাংশ থেকে কর পায় না রাজ্য সরকার।অর্থাৎ এই সমস্ত কয়লা অবৈধ।”
রাজ্যের লাইসেন্স প্রাপ্ত কয়লা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতিবেশী রাজ্য অসমের কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গে মেঘালয়ের কয়লা মাফিয়াদের যোগসাজেশ রয়েছে।এই চক্রের পাণ্ডাদের এজেন্টরা রাজ্যে ছিলো সক্রিয়।মূলত তাদের হাত ধরেই অন্যান্য পণ্যের চালানের নামে শুল্কমুক্ত কয়লার চালান প্রবেশ করতো রাজ্যে।
কয়লা চোরা চালান কারবারীদের এই নেট ওয়ার্ক সম্পর্কে খবর ছিলো মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের কাছে।মূলত এই কারণেই সিন্ডিকেট রাজ ভেঙে দিতে চূড়াইবাড়ি সফর করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।সিন্ডিকেটের প্রাণ ভোমরা ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
অবৈধ ব্যাবসায়ী সহ দুর্নীতিবাজ সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের চূড়াইবাড়ি চেকপোস্ট পরিদর্শনের পর অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাও কয়লা মাফিয়াদের বিরুদ্ধে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন।তদন্তে নেমে কয়েক হাজার কোটি টাকার কয়লার জাল চালানের হদিস পেয়েছে অসম পুলিশ।
রাজ্যেও একই অবস্থা।অন্য পণ্যের চালানের নাম করে অবৈধভাবে কয়লার চালান নিয়ে আসছে কারবারীরা।যদিও এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা হুঙ্কার দেওয়ার পর তারা আপাতত হাত গুটিয়ে রেখেছে।তবে সঠিক ভাবে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে আরও অনেক রাঘব-বোয়াল।শেষ পর্যন্ত কোন পথে হাটে পুলিশ, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
প্রসঙ্গত বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির বাড়িতে হানা দিয়েছিলো সিবিআই। গোটা বাংলা জুড়েই যে কয়লা মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্ত তা থেকেই স্পস্ট।