ডেস্ক রিপোর্টার,২৯জুলাই।।
রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে বহু গাল ভরা ভাষণ দিয়ে থাকেন বিজেপির নেতা- মন্ত্রী থেকে শুরু করে নেতারাও। অভিযোগ, আক্ষরিক অর্থে মন্ত্রী,নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবের কোন সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায় না। রাজ্যের প্রধান দুই রেফারেল হাসপাতাল জিবি ও আইজিএমের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও নানান অভিযোগ সামনে এসেছে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। এবার অভিযোগের তীর রাজ্যের জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল গুলির দিকে। অভিযোগ, রাজ্যের জেলা ও হাসপাতালগুলিতে সাপের কামড়ের ভ্যাকসিনের প্রবল স্বল্পতা রয়েছে। এই কারণেই জেলা ও মহকুমা গুলিতে হাসপাতালগুলিতে সাপের কামড়ে আহত লোকজন সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুও ঘটছে রোগীদের।
বরাবরই প্রতিবছর আষাঢ় – শ্রাবণ মাসগুলিতে গ্রাম- পাহাড়ে সাপের বেশি আনাগোনা দেখা যায়। এই সময়ই গ্রাম- পাহাড়ে সর্প দংশনের ঘটনাও তুলনা মূলক ভাবে বেশি ঘটে থাকে। এপার ও তার ব্যতিক্রম নয় রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রাপ্ত পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় সম্প্রতি এখন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৬ জন রোগী সাপের কামড়ে আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন অধিকাংশকেই জিবি হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়েছে কারণ জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল গুলিতে সাপের কামড়ের পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না থাকায় হত রোগীদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় রাজধানীর হাসপাতাল গুলিতে তবে এই মরশুমে সাপের কামড়ে হত চারজনের মৃত্যু হয়েছে উপযুক্ত সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকার কারণেই তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। অর্থাৎ এক প্রকার বিনা চিকিৎসাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি উত্তর জেলার কাঞ্চনপুরের সাতনালার বাসিন্দা কৃতান্ত রিয়াং নামে ৭ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয় সাপের কামড়ে। শিশুটিকে সাপে কামড় দেওয়ার পর তার পরিবারের লোকজন কাঞ্চনপুর হাসপাতালে নিয়ে আসে। কিন্তু কাঞ্চনপুর হাসপাতালে সাপের কামড়ের কোনো ভ্যাকসিন নেই। স্বাভাবিক কারণেই সর্প দংশনে আহত শিশুর চিকিৎসা করতে পারেনি কাঞ্চনপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা সঙ্গে সঙ্গে এই শিশুটিকে রেফার করে দেয় ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস, ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে পৌঁছার আগেই কৃতান্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যদি কাঞ্চনপুর হাসপাতালে সাপের কামড়ের ভ্যাকসিন মজুত থাকতো,তাহলে কৃতান্ত রিয়াংকে প্রাণ দিতে হতো না। কাঞ্চনপুর হাসপাতালে সাপের কামড়ের ভ্যাকসিন না থাকার কারণেই কৃতান্তকে পাঠানো হয়েছিল ধর্মনগর হাসপাতালে। কিন্তু কাঞ্চনপুর থেকে ধর্মনগর হাসপাতালে দূরত্ব অনেকটাই।এই পথ অতিক্রম করে ধর্মনগর হাসপাতালে পৌঁছার আগেই বিষাক্ত সাপের বিষে লীন হয়ে যায় শিশু কৃতান্তর শরীর। শেষ পর্যন্ত রাস্তাতেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় তার। একই অবস্থা রাজ্যের প্রত্যন্তের হাসপাতাল গুলিতেও। সেখানেও মজুত নেই সাপের কামড়ের ভ্যাকসিন। সাপ কামড় দিলে আহত রোগীদের জিবি বা আইজিএম হাসপাতালে না পৌঁছাতে পারলে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তাদের জীবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *