
ডেস্ক রিপোর্টার,৬নভেম্বর।।
মুহুরি অমিত আচার্য্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযুক্ত আইনজীবীরা এখনো অধরা। তারা পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। অথচ তারা ঘুরছে প্রকাশ্যে।ঘটনার এক মাসের অধিক সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও অভিযুক্ত আইনজীবীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে টাল বাহানা করছে পুলিশ। খুন হওয়া অমিত আচার্যের পরিবার বিচারের আশায় ঘুরছে পুলিশের দরজায় দরজায়। কিন্তু কে কার কথা শুনে? অমিতের অসহায় পরিবারকে বিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য কেউ নেই। প্রকাশ্যে চলে এসেছে পুলিশের তদন্তের দেওলিয়াপনাও।

পশ্চিম জেলা ও দায়রা আদালত চত্বরে অমিত আচার্য্যর মারধর করেছিলো কয়েকজন আইনজীবী।সঙ্গে ছিলো জনা তিনেক মুহুরিও।তাদের সংঘ বদ্ধ আক্রমণে গুরুতর জখম হয়েছিলেন অমিত। ঘটনা ছিলো গত ৫ সেপ্টেম্বর। উন্নত চিকিৎসার জন্য অমিতকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কলকাতায়। গত ২৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছিল। ঘটনার পর পরই পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। অমিতের মৃত্যুর পরও দায়ের করা হয়েছিল খুনের মামলা।পুলিশ ভারতীয় দণ্ড বিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় মমলা রুজু করেছিলো।
এরপর সবই ফিকে হয়ে যায়। তদন্তের নামে পশ্চিম থানার পুলিশ শুরু করে বেলেল্লাপনা।অভিযুক্ত আইনজীবী গোপাল সিং, অনির্বাণ লোধ, রাজেশ সরকার, বিভাস দেববর্মা এবং মুহুরী শিবজুৎ বড়ুয়া, সুদীপ দেব সহ আরো কয়েকজন পুলিশের চোখের সামনেই ঘুরাফেরা করছে। কিন্তু পুলিশ কালা কোটধারীদের বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলছে প্রতিনিয়ত।

অমিত আচার্যের মৃত্যুর পর রাজধানীর পুলিশ জেলা ও দায়রা আদালতে থাকা সিসি ক্যামেরা সিজ করে।একই সঙ্গে ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিয়েশন ও আদালত চত্বরে থাকা লিফটের সিসি ক্যামেরাও সিজ করে। এই সমস্ত সিসি ক্যামেরায় অমিতকে মারধর করার সমস্ত ফুটেজ রয়েছে। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সিজ করে তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছে। করেছে উদ্ধারকৃত ফুটেজের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ। তদন্তকারী পুলিশের একাংশের দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে স্পস্ট কে বা কারা অমিত আচার্য্যকে প্রকাশ্যে মারধর করছে? অনুসন্ধানকারী পুলিশের হাতে এই তথ্য থাকা সত্বেও অভিযুক্ত আইনজীবীদের থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সাহস করছেন না শহরের বাঘা বাঘা পুলিশ অফিসারা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজধানী পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সাধারণ মানুষ।

তাহলে কি করছে পুলিশ? পুলিশ বসে আছে ময়না তদন্তের রিপোটের জন্য। কবে আসবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট? কেউ জানেন না।কারণ অমিত আচার্যের মৃত্যু হয়েছিলো কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।তার পরিবার মৃতদেহ সৎকার করেছিলো কলকাতাতেই।স্বাভাবিক ভাবেই ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসবে কলকাতার সেই বেসরকারি হাসপাতাল থেকেই। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের হাতে এখনো পৌঁছায় নি ময়না তদন্তের রিপোর্ট। অমিত আচার্যের ময়না তদন্তের রিপোর্ট পরিবর্তন করার জন্যও সক্রিয় হয়ে উঠেছে আইনজীবীদের একটি গ্রুপ। আমরা ” জনতার মশাল” শেষ পর্বে তুলে ধরেছিলাম এই তথ্য। এখন ময়না তদন্তের রিপোর্ট ঘুরানোর জন্য চলছে টাকার খেলা। এমন বুদ বুদ গন্ধও বেরিয়ে আসছে আগরতলা আদালত চত্বর ও পশ্চিম থানা থেকে।

প্রশ্ন হচ্ছে, অমিত আচার্যের মৃত্যু গোটা দেশে বিরল। সম্ভবত আদালত চত্বরে আইনজীবীরা সঙ্ঘবদ্ধ কাউকে হত্যা করার ঘটনা এটাই প্রথম। কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে কেন নিশ্চুপ শাসক দল বিজেপি? কি করছে প্রধান বিরোধী দল তিপ্রামথা? অপর দুই বিরোধী সিপিআই ও কংগ্রেস। কোথায় ভেকধারী সুশীল সমাজ? কাউর কোনো প্রতিবাদ নেই।কারণ অভিযুক্তরা আইনজীবী? তাহলে বলতেই হয় আইনজীবীরা আইনের উর্ধ্বে। অপরাধ করলেও তাদের কোনো শাস্তি হবে না? সময়েই উওর মিলবে এই সমস্ত প্রশ্নের।