
ডেস্ক রিপোর্টার, ২০নভেম্বর।।
টানা ৫৫ দিন টালবাহানার পর পুলিশ গ্রেফতার করেছে মুহুরী অমিত আচার্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত আইনজীবী গোপাল সিংকে। দীপাবলির উৎসবের সকালেই পুলিশ গোপালকে গ্রেফতার করেছিলো। বর্তমানে গোপাল পুলিশ হেফাজতে। আগামী ২৪ নভেম্বর অভিযুক্ত আইনজীবী গোপাল সিংকে ফের তোলা হবে আদালতে। অমিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরোও তিন আইনজীবী অনির্বাণ লোধ, রাজেশ সরকার, বিভাস দেববর্মা এবং মুহুরি শিবজুৎ বড়ুয়া, সুদীপ দেব এখনো পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে রাজধানীর পুলিশ জানিয়েছে, খুব শীঘ্রই অমিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাদবাকি অভিযুক্ত আইনজীবী ও মুহুরীদের গ্রেফতার করা হবে।

অমিত আচার্য্য হত্যা মামলার তদন্তে পুলিশের মন্থর গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। বয়ে ছিলো সংশয়ের বাতাবরণ। শেষ পর্যন্ত দেরিতে হলে পুলিশ একজনকে জালে তুলতে সক্ষম হয়েছে। গোপাল সিংয়ের গ্রেফতারের পর অভিযুক্তের তালিকায় থাকা আইনজীবী ও মুহুরীরা নিরাপদে গা ঢাকা দিয়েছে বলে দাবী পুলিশের। অনুসন্ধানকারী পুলিশ বলেছে, অভিযুক্তরা এখনো পুলিশের রাডারে মধ্যেই। পুলিশি চক্রবুহ্য ভেদ করে তারা বের হতে পারে নি।তাই উপযুক্ত সময়েই অভিযুক্তদের করা হবে গ্রেফতার।

তদন্তকারী পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, একটি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ের লেনদেন নিয়ে মূলত ঝামেলা হয়েছিল। এর সূত্র ধরেই ভর আদালতে একাংশ আইনজীবী সঙ্ঘবদ্ধভাবে আক্রমণ মুহুরী অমিত আচার্য্যকে অর্ধ মৃত করেছিলো ।শেষ পর্যন্ত উন্নত চিকিৎসার জন্য অমিত আচার্য্যকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। গত ২১সেপ্টেম্বর কলকাতায় মৃত্যু হয় অমিত আচার্যের। মৃত্যুর পর অমিতের বাবা দিলীপ আচার্য্য পশ্চিম থানায় খুনের মামলা দায়ের করেছিলেন। এই মামলার প্রেক্ষিতেই আইনজীবী গোপাল সিংকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশের প্রাপ্ত তথ্য বলছে, যে মামলার লেনদেন কেন্দ্র করে ঝামেলা হয়েছিল, সেই মামলার মূল আইনজীবীও রয়েছেন পুলিশের রাডারের মধ্যে। অবশ্যই তার নাম অভিযোগ পত্রে নেই।কিন্তু পুলিশ তদন্তের স্বার্থে তাকে গ্রেফতার করতে পারে। এই আইনজীবীর বাড়ি বড়দোয়ালী স্কুল সংলগ্ন তালতলা এলাকায়। এই আইনজীবী এক সময়ে ছিলেন কট্টর বামপন্থী।২০২১- র পুর নির্বাচনের সময় তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এখন তিনি বিজেপির মস্ত বড় হনু। অভিযোগ, তিনি প্রতিদিন দল ও মুখ্যমন্ত্রীর নাম কালিমা লিপ্ত করছেন। এলাকায় চুটিয়ে করছেন জমি ব্যবসা।

বাম থেকে রাম শিবিরে আসা দুর্নীতিবাজ এই আইনজীবীর অস্কারাতেই গোপাল, অনির্বাণ, রাজেশরা নাকি নিরীহ মুহুরী অমিত আচার্য্যকে মারধর করেছিলো। এবং শেষ পর্যন্ত অমিতের মৃত্যু হয়েছে। আদালতে কান পাতলেন শুনা যায়,অমিত হত্যার পর এই আইনজীবী প্রকাশ্যে বলেছেন, “কিছুই হবে না। মুখ্যমন্ত্রী ডা:মানিক সাহা, প্রদেশ বিজেপির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য আছেন আমার সঙ্গে”। অর্থাৎ বড়দোয়ালি জমিদস্যু আইনজীবী অমিত আচার্য্য হত্যা মামলা থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য ভর আদালতে দাড়িয়ে নিলামে তুলছেন রাজ্যের নিষ্কলুষ মুখ্যমন্ত্রী ও প্রদেশ বিজেপির সভাপতিকে।

কালোকোটধারী এই নেতার কার্য্য কালাপে বীতশ্রদ্ধ আদালতের বিজেপি পন্থী অন্যান্য আইনজীবীরা। কবে পুলিশ গ্রেফতার করবে বিজেপির ঘরে বাসা বেধে গুপ্টি মেরে বসে থাকা সুযোগ সন্ধানী এই “কমরেড” আইনজীবীকে? তার প্রহর গুনছেন খোদ আইনজীবীদের একাংশ। এবং বড়দোয়ালী তালতলা অঞ্চলের লোকজন।