তিপ্রামথার পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছিল, ওপার থেকে চাকমা সম্প্রদায়ের মানুষ ত্রিপুরায় অবৈধ ভাবে চলে আসছে।রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তারা ফরেস্ট ল্যান্ড দখল করে বসতি গড়ে তুলছে। এবং ভারতীয় নাগরিকত্ব হাতিয়ে নিয়ে তারা সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। এই নিয়ে চলতে থাকা দ্বন্দ্বের মধ্যেই স্বঘোষিত রাজা প্রদ্যুৎ কিশোরকে পাল্টা দিয়েছেন রাজ্যের পেঁচারথলের বাসিন্দা তথা আইএএস তড়িৎ চাকমা।

ডেস্ক রিপোর্টার,২রা মে।।

                   “রাজ্যে বসবাসকারী চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজন বিদেশী”। — প্রদ্যুৎ কিশোরের দল তিপ্রামথা বহুবার প্রকাশ্যে এই কথা বলেছে। তিপ্রামথার নেতৃত্ব চাকমা সম্প্রদায়কে রাজ্যের “জনজাতি” হিসাবে মান্যতা দিতে রাজী নয়। বিভিন্ন সময়ে মথা ব্রিগেড তা স্পস্ট করেছে। তিপ্রামথার নেতৃত্বের এই ধরনের “আলতো” বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন ছামনু কেন্দ্রের বিধায়ক শম্ভু চাকমা। উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শান্তনা চাকমাও। এই ইস্যুতে বহুবার জল ঘোলা হয়েছে। চাকমা সম্প্রদায়ের এলিট ক্লাসের লোকজন প্রদ্যুৎ কিশোরের দলের এই বক্তব্যকে সমর্থন করে না। চাকমা সম্প্রদায়ের সঙ্গে রাজ্যের অন্যান্য জনজাতি সম্প্রদায়ের এই ঠান্ডা লড়াই দীর্ঘ দিনের। এই ইস্যুতে চাকমারা প্রদ্যুৎ কিশোরের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ। শেষ পর্যন্ত গত ২৫ মে এই ইস্যুতে হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন গোমতী জেলার জেলা শাসক তড়িৎ চাকমা।এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

প্রদ্যুৎ কিশোরকে কিভাবে মোক্ষম চাল দিয়ে জব্দ করতে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন জেলা শাসক তড়িৎ চাকমা।

তিপ্রামথার পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছিল, ওপার থেকে চাকমা সম্প্রদায়ের মানুষ ত্রিপুরায় অবৈধ ভাবে চলে আসছে।রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তারা ফরেস্ট ল্যান্ড দখল করে বসতি গড়ে তুলছে। এবং ভারতীয় নাগরিকত্ব হাতিয়ে নিয়ে তারা সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। এই নিয়ে চলতে থাকা দ্বন্দ্বের মধ্যেই স্বঘোষিত রাজা প্রদ্যুৎ কিশোরকে পাল্টা দিয়েছেন রাজ্যের পেঁচারথলের বাসিন্দা তথা আইএএস তড়িৎ চাকমা।  প্রদ্যুৎ কিশোরকে কিভাবে মোক্ষম চাল দিয়ে জব্দ করতে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন জেলা শাসক তড়িৎ চাকমা। এমনটাই গুঞ্জন রাজনীতির অলিন্দে।

তিনি কি ভুলে গেছেন এক সময় প্রদ্যুৎ সহ তার দলের নেতৃত্ব চাকমা সম্প্রদায়কে নানান ভাবে খাটো করে দেখিয়েছেন।

রাজনীতিকদের বক্তব্য, হয়তো, জেলা শাসক তড়িৎ চাকমা প্রদ্যুৎ কিশোরের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করার পেছনে নিজের ব্যক্তিগত বা দাপ্তরিক ব্যস্ততার বিষয় দেখাতেই পারেন। কিন্তু তিনি কি ভুলে গেছেন এক সময় প্রদ্যুৎ সহ তার দলের নেতৃত্ব চাকমা সম্প্রদায়কে নানান ভাবে খাটো করে দেখিয়েছেন। এবং তারা চাকমাদের রাজ্যের জনজাতি হিসাবে মান্যতা দিতেও রাজি নয়। রাজনীতিক বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা, ঘুর পথে জেলা শাসক তড়িৎ চাকমা বুঝিয়ে দিয়েছেন, চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে প্রদ্যুৎ কিশোরের স্থান কোথায়?

তড়িৎ কুমার চাকমা ( ডিএম, গোমতী)

সম্প্রতি  রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ” ঘটনার পর পরেই প্রদ্যুৎ কিশোর ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এবং তিনি জেলা শাসক তড়িৎ চাকমার বিষয়টি জানিয়ে ছিলেন। তখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন দিল্লিতে। প্রদ্যুৎ কিশোরের কাছ থেকে এই ঘটনা শুনে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য। তবে এখন পর্যন্ত মুখ্য সচিবের কাছ থেকে কোনো ফিডব্যাক পান নি মুখ্যমন্ত্রী।”
                 জেলা শাসক তড়িৎ চাকমার সঙ্গে ঝামেলার পর প্রদ্যুৎ কিশোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে জানিয়েছিলেন, ” বাংলাদেশে চাকমা সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের ঘটনার পর তিনি সরব হয়েছিলেন। করেছেন জোরালো প্রতিবাদ।” প্রদ্যুৎ তাঁর এই বক্তব্যের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন, “চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজনকে তিনি কতটা ভালবাসেন”?

দীর্ঘ দিন পর প্রদ্যুতের দম্ভের মধ্যে শক্ত ভাবে কষাঘাত করেতে পেরেছেন গোমতীর ডিএম তড়িৎ চাকমা।

ঘটনার পর প্রদ্যুৎ ব্রিগেড পাল্টা হুলিয়া জারি করেছিল।তাদের দাবী, ৯৬ ঘণ্টা অর্থাৎ চার দিনের মধ্যে জেলা শাসক তড়িৎ চাকমার বিরুদ্ধে প্রশাসন  কোনো ব্যবস্থা না নিলে ডিএমের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেবে। সোমবার প্রদ্যুৎ ব্রিগেড ডিএম অফিসে তালা ঝুলিয়ে তাদের দেওয়া হুলিয়া বাস্তবায়িত করেছে। প্রদ্যুৎ কিশোরের সাংগঠনিক শক্তির কাজে পরাস্ত রাজ্য প্রশাসন। রাজনীতিকরা বলছেন, প্রদ্যুৎ ব্রিগেড গোমতীর ডিএএম অফিসে তালা ঝুলিয়ে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করলেও দীর্ঘ দিন পর প্রদ্যুতের দম্ভের মধ্যে শক্ত ভাবে কষাঘাত করেতে পেরেছেন গোমতীর ডিএম তড়িৎ চাকমা ।
#Tripura #Politics #Tipramotha #Chakma#community#DM#Gomoti# #Pradyut #JM


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *