ডেস্ক রিপোর্টার, ২৮ফেব্রুয়ারি।
দেশের নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী,২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের এক্সিট পোল বন্ধ ছিলো। গত ২৭ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে গোটা দেশের ভোট সমীক্ষক সংস্থাগুলো ত্রিপুরার ভোট নিয়ে এক্সিট পোল শুরু করেছিলো
একই সঙ্গে উওর পূর্বাঞ্চলের দুই রাজ্য নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ের বিধানসভা নির্বাচনেরও এক্সিট পোল করা হয়। স্বাভাবিক ভাবেই উওর পূর্বাঞ্চলের তিন রাজ্যের ভোট নিয়ে মহা এক্সিট পোল করবে দেশের বিভিন্ন ভোট সমীক্ষক সংস্থা সহ নানান সংবাদ মাধ্যম। মহাএক্সিট পোল থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে কোন রাজনৈতিক দল সরকার গড়বে। এবং কোন রাজনৈতিক দল হারাবে ক্ষমতা।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাঙ্গ হয়েছিলো ভোট।
এর পর থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক্সিট পোলের ছয়লাপ দেখা যায়। এতে রাজ্য রাজনীতির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা – কর্মী সমর্থক সহ সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়। এই সমস্ত এক্সিট পোলের অবশ্যই বিশ্বাস যোগ্যতা নেই বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা। তারপরও এই সমস্ত এক্সিট পোল চলে এসেছে মানুষের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভিন রাজ্যে ইউ টিউবারদের মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে নিজেদের স্বার্থে এক্সিট পোল করিয়েছে বলে বহু অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া এই সব ইউ টিউবারদের এক্সিট পোল দেখলেই বিষয়টি স্পস্ট হয়ে যায়। রাজনীতি সম্পর্কে অ, আ জানা লোকজনেও বুঝতে অসুবিধা হয়নি গোটা এক্সিট পোলটি কোনো একটি দলকে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য করেছে। কোনো কোনো এক্সিট পোলে দেখানো হয়েছে শাসক দল বিজেপি ৪৫ থেকে ৫০ টি আসন পেয়েছে। এটা একেবারেই অবাস্তব।শাসক দলের অতি বড় সমর্থকও সম্ভবত এই রেজাল্ট আশা করছে না। কারণ এবারের ভোটের চতুর মুখী লড়াইয়ে বিজেপির পক্ষে ৪০ থেকে ৫০ টি আসন পাওয়া আকাশ কুসুম ভাবনা। আবার কোনো কোনো এক্সিট পোলে দেখানো হচ্ছে শাসক দল ৫ থেকে ৭টি আসন পাবে।এটাও একেবারে অবাস্তব। কোনো কোনো সংস্থার এক্সিট পোল বাম -কংগ্রেস জোটকে আসন দিয়েছে ৪২টি।রাজনীতিকরা বলছেন এটাও বাস্তব সম্মত এক্সিট পোল নয়। বেশ কয়েকটি সংস্থা প্রদ্যুৎ কিশোরের তিপ্রামথাকে ২০ থেকে ২৩টি দিয়েছে। সংলিষ্ট সংস্থা গুলির এক্সিট পোলের সঙ্গে যে বাস্তবের কোনো মিল নেই তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। কোনোটাতে দাবি করা হয়েছে মথার আসন সংখ্যা হতে পারে ১০ থেকে ১৩টি। এই পরিসংখ্যান অবশ্যই কিছুটা হলেও বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করছেন রাজনীতিকরা।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিভিন্ন জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের লোগো সেটে এক্সিট পোল করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের বিপক্ষ শিবিরের উপর স্নায়ুর চাপ বাড়ানোর জন্যই এই রন কৌশল নিয়েছে বলে দাবি করছেন রাজনীতিকরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াছড়ি ত্রিপুরার ভোট নিয়ে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর রিপোর্ট। সম্প্রতি
ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর একটি রিপোর্টে দেখানো হয়েছে শাসক দল বিজেপি পেয়েছে ৪০টির অধিক আসন।আবার গত ২৪ঘন্টা ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর আরোও একটি রিপোর্ট।তাতে দেখানো হয়েছে বাম কংগ্রেস জোট পাচ্ছে ৩৯ টি আসন। তিপ্রামথাকে ১৩টি আসন।
রাজনীতিকরা বলছেন, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর এই সংক্রান্ত রিপোর্ট ফেক।কারণ এই ভাবে গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসা সম্ভব নয়।তাহলে প্রশ্ন উঠবে রাজ্য ও দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। সুতরাং গোটা বিষয়টি ফেব্রিকেটেড। প্রেসিস নামক দিল্লির একটি সংস্থা এমবিবি ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের দিতে একটি সমীক্ষা করিয়েছে। এই সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে বিজেপি পাবে ৩৪ থেকে ৩৯টি আসন। তিপ্রা মথা পেতে পারে ১১থেকে ১৬টি আসন। এবং বাম কংগ্রেস জোট পাবে ৯ থেকে ১৪টি আসন। এই সমীক্ষা কতটা বাস্তব সম্মত ত নীয়েও উঠছে প্রশ্ন।
ভোটের পর থেকে রাজ্যের মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানান ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক দলগুলি এক্সিট পোলের নামে অপ প্রচার চালানো হয়েছে বলেই দাবি করছেন রাজনীতিকরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, ২৩ – র ভোট ত্রিশঙ্কু হওয়ার সম্ভবনা প্রবল। বিজেপি, বাম – কংগ্রেস জোট ও তিপ্রামথা কোনো দলের পক্ষেই একক ভাবে সরকার গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্তত রাজনীতির ক্যানভাস থেকে এই চিত্রই নাকি প্রকট হচ্ছে।