ডেস্ক রিপোর্টার, ২৭মার্চ।।
              রাজ্য রাজনীতির দীর্ঘ দিনের ইতিহাস ব্রেক করলো জনজাতি ভিত্তিক রাজনৈতিক দল তিপ্রামথা।সম্ভবত এই প্রথম ত্রিপুরার কোনো জনজাতি ভিত্তিক রাজনৈতিক দল বিরোধী আসনে বসেছে। এর আগে কোনো জনজাতি ভিত্তিক রাজনৈতিক দল বিধানসভার বিরোধী আসনে বসতে পারেনি। তিপ্রামথা প্রথম দল হিসাবে এই তকমা অলংকৃত করেছে।সৌজন্যে অবশ্যই মথার চেয়ারম্যান প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ।এটা অবশ্যই রাজ্য রাজনীতির নতুন মেরুকরণ বলা চলে।
              রাজনীতিকরা বলছেন, দীর্ঘ বাম জামানায় পাহাড়ের রাজনীতি ছিলো এক গেয়েমি। বিভিন্ন সময়ে জনজাতি ভিত্তিক দল গুলি এডিসি দখল করলেও বিধানসভায় বিরোধী দল হিসেবে উঠে আসতে পারেনি। ১৯৮৮ তে টিইউজেএস এবং ২০১৮ সালে আইপিএফটি শাসক জোটের শরিক হয়েছিলো। বিভিন্ন বিধানসভা নির্বাচনে আইএনপি আসন পেলেও তারা ক্ষমতায় আসতে পারেনি।কারণ তারা ছিলো কংগ্রেসের জোট শরিক।১৯৯৩ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তারা কংগ্রেসের সঙ্গে থাকলেও শাসকের তকমা পায় নি।তখন একক ভাবে বিরোধী দল হিসাবে বিধানসভায় শোভা বর্ধন করতো কংগ্রেস।


২০২৩ – র নির্বাচনে রাজ্য রাজনীতির চিত্র পাল্টে গিয়েছে।ভোটের নতুন মেরুকরণ হয়েছে। পাহাড় ঝুঁকে গিয়েছে তিপ্রামথার দিকে।একক ভাবে মথা পেয়েছে ১৩টি আসন। বাম – কংগ্রেস জোট পেয়েছে ১৫টি আসন ।স্বাভাবিক ভাবেই নিয়ম অনুযায়ী, তিপ্রামথাকে বিরোধী দলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হয়েছেন মথার নেতা অনিমেষ দেববর্মা। ইতিমধ্যে চলতি বিধানসভা অধিবেশনে অনিমেষ বিরোধী দল নেতার ভূমিকা পালন করেছেন। নিঃসন্দেহে জনজাতিদের কাছে তিপ্রামথার এই সাফল্য প্রসংশনীয়।


রাজনীতিকরা বলছেন, ২৩- র বিধানসভার নির্বাচনের ভোটের মেরুকরণ বয়ে এনেছে নতুন বার্তা।কারণ ভোটে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, জনজাতি ভোটের সিংহ ভাগ পড়েছে তিপ্রামথার দিকে। এবং বাঙালি ভোট বিভক্ত হয়ে বিজেপি ও সিপিআইএমের দিকে ঝুঁকেছে। আগামী দিনেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে পাহাড়ে দাত বসাতে পারবে না বিজেপি, সিপিআইএম ও কংগ্রেসের মত জাতীয় দলগুলি।



এবারের নির্বাচনে পাহাড় সিপিআইএমকে খালি হাতে বিদায় দিয়েছে। কংগ্রেস পাহাড়ে অস্তিত্বহীন।বিজেপি পাহাড়ে বাঙালিদের সৌজন্যে  ছয়টি আসন দখল করেছে। দুই জনজাতি ভিত্তিক দল তিপ্রামথা ও আইপিএফটি মিলে দখল করেছে মোট ১৪টি (১৩+১) আসন। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে জাতীয় দলগুলির পক্ষে অদূর ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *