আগরতলা,১৩ ফেব্রুয়ারি।।
       যুবাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে কর্মসংস্থানমুখী করে তোলা হচ্ছে। এজন্যই ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই ভারত সরকার চালু করে স্কিল ইন্ডিয়া মিশন। রাজ্যেও শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধীনে গঠন করা হয়েছিল দক্ষতা উন্নয়ন অধিদপ্তর। গত ৯ বছরে এর মাধ্যমে রাজ্যের ৪২ হাজার যুবক যুবতীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার আনন্দনগরে মহিলাদের জন্য জাতীয় দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের (এনএসটিআই) নতুন ক্যাম্পাসের দ্বারোদঘাটন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠানে নয়াদিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি কেন্দ্রীয় দক্ষতা উন্নয়নমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান অংশ নেন। ইনস্টিটিউটটি ৪.১ একর এলাকায় মোট ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে একাডেমিক ব্লক, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ব্লক ও ১৬ কক্ষ বিশিষ্ট হোস্টেল। এই প্রতিষ্ঠানে কসমেটোলজি, পোশাক তৈরি, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা, ক্যাটারিং ও হসপিটালিটি, কম্পিউটার সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন ও অফিস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে ১০২ জন প্রশিক্ষণার্থী রয়েছেন। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা ২০০তে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২ মার্চ এই ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল।


অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দক্ষতা উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থানুকূল্যে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা, সংকল্প প্রকল্প, রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প ও বিভিন্ন দপ্তরের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিতে যুবক যুবতীদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। দক্ষতা উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের সহায়তায় রাজ্যের ১৩ জন প্রার্থীকে দিল্লিতে জাপানী ভাষায় শিক্ষা প্রশিক্ষণের কর্মসূচি চালু রয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের থেকে ৩ জন প্রার্থী নার্সিং সেক্টরে জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে
প্রার্থীদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এরফলে রাজ্যের ৬ হাজার বেকার যুবক যুবতী উপকৃত হবে।


এতে ব্যয় হবে ৫ কোটি টাকা। তাছাড়াও রাজ্যের মহিলাদের কল্যাণে ছাত্রীদের বাইসাইকেল প্রদান, প্রত্যেক জেলায় মহিলা থানা নির্মাণ, স্বসহায়ক দল গঠন, লাখপতি দিদি তৈরি, প্রথমবারের মতো টিএসআর বাহিনীতে মহিলা জওয়ান নিয়োগ করা হয়েছে।
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় দক্ষতা উন্নয়নমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়িত্বভার গ্রহণের পর দেশের মহিলাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এরই ফলে শিক্ষার সুযোগ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশীদারিত্ব বিগত সময়ের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞান, কারিগরি, প্রযুক্তি ও গণিত বিষয়ে পড়াশুনার ক্ষেত্রে দেশের মোট ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ ছাত্রী। পৃথিবীর যে কোনও দেশের তুলনায় এই সংখ্যা সর্বাধিক। তিনি আরও বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আমলে দেশের ৪ কোটি মহিলাকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর, ১০ কোটি মহিলাকে উজ্জ্বলা যোজনায় বিনামূল্যে গ্যাসের সংযোগ, মুদ্রা যোজনায় পুরুষদের চাইতে মহিলাদের বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে।
এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক।শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা,
উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, সচিব কিরণ গিত্যে, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *