ডেস্ক রিপোর্টার,২১ আগস্ট:
দালাল চক্রের হাত ধরে ভারতীয় আধার কার্ড পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাত উল মুজাহিদীনের ডেরায়।এই অধার কার্ড ব্যবহার করে জামাত জঙ্গিরা ভারত ভূখণ্ডে আস্তানা গড়ার চেষ্টা শুরু করেছে।এই হাড়হিম কথা তথ্য সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামের ঠিকানা দিয়েই জঙ্গিরা আধার কার্ড হাতিয়ে নিয়েছে।এখন পর্যন্ত ১০জন জামাত জঙ্গির নামে রাজ্যের বিভিন্ন ঠিকানায় আধার কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা আধার কার্ড হাতিয়ে নেয়া জামাত জঙ্গিদের নাম গোপন রাখছে। শুধু আধার কার্ড নয়, জামাত জঙ্গিরা রাজ্যের ঠিকানায় বগলদাবা করেছে পিআরটিসিও।মোটা অঙ্কের বিনিময়ে রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দালাল চক্রের চাইরা জামাতের সদস্যদের হাতে আধার কার্ড থেকে শুরু করে পিআরটিসি,স্কুল সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট সহ নানান প্রযোজনীয় দস্তাবেজ তুলে দিচ্ছে বলে খবর। এই সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের জন্য পঞ্চাশ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকার প্যাকেজ পেয়ে থাকে চক্রের পান্ডারা। রাজ্যের সবকয়টি মহকুমা শাসক অফিসেই সক্রিয় দালাল চক্রের এজেন্টরা।তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির কর্মচারীরাও জড়িত বলে সন্দেহ গোয়েন্দার।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তর ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট জমা করা হয়েছে বলে গোয়েন্দার।জামাতের সদস্যদের আধার কার্ড বের করে দেওয়া চাইদের সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছে গোয়েন্দা। গোয়েন্দা আধিকারিকদের আশঙ্কা, ত্রিপুরার ঠিকানায় আধার কার্ড,পিআরটিসি হাতিয়ে নিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তারা অবস্থান করছে।জামাত সদস্যরা যে কোনো সময় রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বড় ধরনের নাশকতা সংঘটিত করতে পারে।তাছাড়া সম্প্রতি তালিবানরা আফগানিস্তান দখল নেওয়াতে জামাতদের এখন পোয়া বারো বলা চলে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সহ বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক এবং তাদের সেনা বাহিনীকে গোটা বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দার ব্যর্থতাও দায়ী বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।কেননা,রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমা শাসক অফিস গুলিতে নিটোল জাল বিস্তার করে রেখেছে দালাল চক্রের চাইরা।টাকা দিলে অতি সহজেই পাওয়া যায় আধার কার্ড।তাছাড়া বিভিন্ন এজেন্সি এখন আধার কার্ডের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।তাদের মাধ্যমেও আধার কার্ড ইস্যু হয়ে থাকে। আধার কার্ড,পিআরটিসি সহ নানান কাগজ পত্র বের করে দেওয়ার জন্য রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দালাল চক্রের সদস্যরা।
সম্প্রতি আগরতলা বিমান বন্দরে আধার কার্ড সহ চার বাংলাদেশি যুবককে গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ।চলছে তদন্ত।এর আগেও এই রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে পুলিশ ভারতীয় আধার কার্ড সহ বাংলাদেশিদের গ্রেফতার করেছিলো।গত কয়েক বছর আগে সোনামুড়ার যাত্রাপুর থানার মহেশপুরের এক বাড়িতে হানা দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকের নামে ইস্যু করা শতাধিক আধার কার্ড উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
প্রসঙ্গত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলা দেশ সফরে এই জামাত জঙ্গীরাই ঝামেলা পাকিয়ে ছিলো।প্রধানমন্ত্রীর কনভয় লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ে ছিলো জামাত সদস্যরা।যদিও বাংলাদেশ পুলিশ কড়া হাতে এই সমস্ত ঘটনা সামাল দিয়েছিলো।তবে ত্রিপুরা আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের আধার কার্ড,পিআরটিসি,স্কুল সার্টিফিকেট ও পাসপোর্ট হাতিয়ে নেওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়।এর আগেও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার সদস্য আব্দুল রহমান কাইয়ুম, হুজি জঙ্গি মামুন মিয়া,সগম আলি, আই এস আই এজেন্ট মুনির খাঁনরা ভারতীয় নানান শংসাপত্র হাতিয়ে নিয়ে বিভিন্ন সময় ব্যবহার করেছিলো ভারতীয় ভূখণ্ড। তারপরও বেহুঁশ রাজ্যের পুলিশ-গোয়েন্দা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *