ডেস্ক রিপোর্টার,২ডিসেম্বর।।
“মা-মাটি-মানুষের” দলের রাজ্য রাজনীতিতে উর্বর জমিতে সাড়ে তিন মাসের চাষবাস। তারপর সদ্য সমাপ্ত আগরতলা পুর নিগম। ভোটে প্রায় ২০ শতাংশ ভোট। পারফরম্যান্স নেহাত খারাপ নয়।অর্থাৎ আশার কিরণ ঝিলিক দিয়েছে। সাফল্য আসতেই শুরু হয়ে গেছে দড়ি টানাটানি।
২০১৮-র পর তৃণমূল কংগ্রেসের বঙ্গ ত্রিপুরার প্রতি কোনো নজর দেন নি। কিন্তু মমতা ব্যানার্জির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নাছুর বাঁধা কিছু কর্মী-সমর্থক ত্রিপুরাতে দলের সলতে জ্বালিয়ে রেখেছিল। বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরাতে নজর দেয়।এবং সদ্য সমাপ্ত পুর ও নগর ভোটে ঝাঁপিয়ে পড়ে সর্বশক্তি নিয়ে। আসে সাফল্যও।
তৃণমূল অন্দরে খবর, ত্রিপুরাতে এই সাফল্যের পর দলের মধ্যে অন্তর্কোন্দল বেড়ে গেছে আরো কয়েকগুণ।দলের পুরানো কর্মীদের প্রশ্ন, তারা কেন ব্রাত্য?একসময় দল চালানোর কেউ ছিলো না।কিন্তু এখন নতুন মুখের ভিড়।তাতে অবশ্যই পুরনোদের কোনো আপত্তি নেই।কিন্তু নতুনদের গুরুত্ব দিতে গিয়ে পুরনোদের ব্রাত্যের তালিকায় ঠেলে দিচ্ছে দলের থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক।
রাজ্যের পুরানো তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের বক্তব্য, এক সময় রাজ্যের যে সকল নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চলতে-ফিরতে গালি দিতেন,তারা এখন স্থান পাচ্ছেন দলের অলিন্দে।অতীতে যারা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের মারধর করতেন, তাদেরকে নিয়ে টানা-হিঁচড়ে শুরু করেছে বঙ্গ নেতৃত্ব।অর্থাৎ ত্রিপুরাতে দলের দুর্দিনের কর্মীদের দূরে রেখে তৃণমূল কর্মীদের “রক্ত খেকো”নেতাদের দলে পুনর্বাসন দিচ্ছে দলের হাই-কমান্ড।
তৃণমূল কংগ্রেসের পুরানো কর্মীদের প্রশ্ন,২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচন,১৯-র লোকসভা নির্বাচনে কোথায় ছিলেন বর্তমানে আপ্যায়ন পাওয়া নেতারা? আজ তারাই সর্বত্র শোভা বর্ধন করছেন।তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা কি আছে বঙ্গ নেতৃত্বের কাছে? রাজ্যের পুরানো তৃণমূলীদের সটান জবাব, পুর ভোটে ভালো রেজাল্টের পর ২৩-এ ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।কিন্তু পুরানো কর্মীদের বাদ দিয়ে বা ব্রাত্য রেখে মমতার ত্রিপুরা জয়ের স্বপ্ন কখনো সম্ভব হবে না। কারণ পুরানো কর্মীদের সংখ্যা নেহাত কম নয়।দলের মধ্যে উপযুক্ত সন্মান না পেলে তারা সরে যাবে।তাতে অবশ্যই ক্ষতি হবে তৃণমূল কংগ্রেসের। এই সকল নেতা-কর্মীদের বরাবর ” পার্টি অন্ত”প্রাণ। তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রাত্য কর্মীদের ভাষায়, বর্তমানে যারা আসছে দলে,বা যাদের নিয়ে বঙ্গ নেতৃত্ব লাফালাফি করছে তারা যেকোনো সময় নিজেদের স্বার্থে দল ছেড়ে চম্পট দেবে।কিন্তু পুরানোৱাই আঁকড়ে ধরে রাখবে জোড়া ফুলকে।তাই তৃণমূল কংগ্রেসের পুরানো নিষ্ঠাবান কর্মীদের বক্তব্য, দল তাদের উপযুক্ত গুরুত্ব দিক,নয়তো অচিরেই ভেঙে পড়বে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘর।আর তাতে মমতা-অভিষেকের ত্রিপুরা জয়ের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *