ডেস্ক রিপোর্টার,১৭মে।।
মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিপ্লব কুমার দেবের অপসারণের পর এবং ডা:মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রী করার পর নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিপ্লবের পরিবর্তে মানিক কেন? এই ইস্যুতে বেধে গিয়েছিলো দক্ষযজ্ঞ,খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি আবাসে। ক্ষোভে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে প্লাস্টিকের চেয়ার ছুঁড়ে মেরেছিলেন মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল।
মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বিপ্লব কুমার দেবের বিকল্প হিসেবে মানিক সাহাকেই কেন বেছে নিয়েছিলো বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মন, রাতনলাল নাথ, প্রণজিত সিংহ রায়রা থাকতে মানিক সাহাকেই মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে বড় কারণ রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনীতিকরা।
দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিধানসভা ভোট। নানান কারণে সাধারণ মানুষ ও দলের মধ্যে বিপ্লব কুমার দেবের বিরুদ্ধে তৈরি হয়েছিল একটা বিরোধী আবহ(সুদীপ বিজেপি ছাড়ার পরও)।দিল্লিতে জমা পড়েছে নানান অভিযোগ। অভিযোগকারীরা স্ব-দলীয়। ২৩-র বৈতরণী অতিক্রম করতে হলে বিজেপি’র দরকার ছিলো একটি “নিস্কলুক” মুখ। রাজ্যে গোপনে সার্ভে করে যাওয়া এজেন্সিও বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে একই বার্তা দিয়েছে।কারণ ভোট ময়দানে বিরোধীরা যেন “মুখ্যমন্ত্রী”কে নিয়ে আঙ্গুল তুলতে না পারে।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বেশ কয়েকটি নাম ছিলো।কিন্তু তাদের কাউকেই কোনোনা কোনো কারণে ” নিস্কলুক ” হিসাবে শংসা পত্র দিতে পারেনি দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। স্ব-দলীয় বিরোধী শক্তি যেমন বিপ্লব দেবের নানান গন্ধ নিয়ে দিল্লির দরবারে হাজির হয়েছিলেন,তেমনি বিপ্লব দেবও স্ব-দলীয় বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন দিল্লিতে বিজেপি’র দরবার হলে। স্বাভাবিক কারণেই ধন্ধে পড়ে গিয়েছিলো বিজেপি নেতৃত্ব।
বিপ্লব দেব ও তাঁর স্ব-দলীয় বিরোধী গোষ্ঠীর অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের মাঝে বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব খোঁজে বের করেছেন রাজ্য সভাপতি ডা: মানিক সাহাকে। কারণ মানিক সাহার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের দুর্নীতির নূন্যতম অভিযোগ নেই। তিনি ছিলেন সংগঠনের মাথায়। রয়েছে সাংগঠনিক দক্ষতা। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করলে বিরোধীরা আক্রমনের সুযোগ পাবে না। একজন চিকিৎসক হিসাবে সমাজে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এরচেয়ে রাজ্য বিজেপিতে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য ফ্রেস কোনো মুখ নেই এই মুহূর্তে।
যদিও প্রদেশ বিজেপিতে গুঞ্জন, সরকার এবং সংগঠন দুইয়ের উপর বিপ্লবের কর্তৃত্বের জন্যই মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে।পাশাপাশি ভোঁতা করা হয়েছে বিপ্লব বিরোধীদের। সবটাই নাকি সাজানো। মানিক সাহা নাকি বিপ্লব কুমার দেবের রাবার স্ট্যাম্প হিসাবেই কাজ করবেন। বিজেপি’র অন্দর মহল থেকে এইসব গুঞ্জন।কিন্তু আর যাই হোক না কেন মুখ্যমন্ত্রীকে বিরোধীদের সুর চড়ানোও আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।তাই রাজ্য রাজনীতির রঙ্গ-মঞ্চে বিরোধীদের পাল্টা আঘাত করতে গেলে শাসক দল বিজেপি’র প্রয়োজন ছিলো একটি দূর্নীতিহীন ‘মুখ’। ডা: মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়ে এটাই করে দেখলো সর্বভারতীয় বিজেপি’র থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *