ডেস্ক রিপোর্টার,১৭মে।।
মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিপ্লব কুমার দেবের ইস্তফার পর গেলো গেলো রব শুরু হয়ে যায়। উঠতে থাকে নানান কথা। রীতিমতো শুরু হয়ে যায় হৈচৈ। বিপ্লব বিরোধী গোষ্ঠী ধরেই নিয়েছে তাদের “জয়” হয়েছে। আসলে বাস্তব চিত্র এমন নয়।
মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিপ্লব কুমার দেবের পরিবর্তন একটা ট্র্যাডিশন। আতঙ্কের কোনো বিষয় নয়। নেই ব্যর্থতা বা সফলতার বিষয়ও। মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তন বিজেপিতে একটা রেওয়াজ। অন্তত ভারত বর্ষে বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের দিকে তাকালে এমন খুব কম রাজ্য পাওয়া যাবে,যেখানে মুখ্যমন্ত্রীরা পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করেছেন।বরং পাঁচ বছরের আগে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়েছেন এমন মুখ্যমন্ত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি।বিপ্লব কুমার দেবও তাদের একজন।
নরেন্দ্র মোদী একটানা ১৩বছর গুজরাটের
মুখ্যমন্ত্রী’র দায়িত্বে ছিলেন। এরপর তিনি সরাসরি চলে আসেন প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে। রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্দরা রাজে সিন্ধিয়া ছিলেন পূর্ন সময়ের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি পৃথক ভাবে দুইবার পূর্ন সময়ের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। বসুন্দরা রাজে সিন্ধিয়ার মুখ্যমন্ত্রীত্বের সময় ছিল ২০০৩ থেকে ২০০৮ এবং ২০১৩ থেকে ২০১৮। হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রেম কুমার ধূমল ও ছত্রিশগড়ের রমন সিং, আসামের সর্বানন্দ সানোয়াল বিজেপি’র পুর্নসময়ের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
গুজরাট, দিল্লি, উত্তরাখন্ড ও কর্ণাটকে বিজেপি’র মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তনের নজির রয়েছে। গুজরাটে কেশুভাই প্যাটেল প্রথম দফায় মাত্র ২২১দিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।এরপর কেশুভাইকে সরিয়ে আনা হয়েছিলো সুরেশ মেহতাবকে। ২০০১ সালে ফের কেশুভাইকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। তারপর আসেন নরেন্দ্র মোদী।তিনি একটানা ১৩বছর গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরতেই ফের অদল-বদল শুরু হয়। মোদীর পর গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হন আনন্দিবেন প্যাটেল। তিনিও পূর্ন সময়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেননি।২০১৭ সালের গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের পর মুখ্যমন্ত্রী করা হয় বিজয় রুপিনিকে। আবার ২০২১-এ ফের পরিবর্তন। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয় ভূপেন্দ্র ভাই প্যাটেলকে।
দিল্লিতেও একই অবস্থা।১৯৯৩ সালে দিল্লিতে ক্ষমতায় এসেছিলো বিজেপি। ১৯৯৮ পর্যন্ত গেরুয়া শিবিরের তিনজন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। প্রথমে ছিলেন মদন লাল খুরানা।দ্বিতীয় জন ছিলেন সাহেব সিং ভার্মা এবং তৃতীয় জন সুষমা স্বরাজ। উত্তরাখণ্ডের দিকে তাকালেই দেখা যায় একই চিত্র। ২০১৬ থেকে ২০২২ পর্যন্ত তিন জন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। প্রথমে সিংহ রাওয়াত, দ্বিতীয় জন তীর্থ সিং রাওয়াত ও তৃতীয় জন পুস্কর সিং ধামী। তিনি অবশ্যই দ্বিতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ত্রিপুরার মত কর্ণাটকেও ২০২৩-এ অনুষ্ঠিত হবে বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু বি এস ইয়েদুরাপ্পার মুখ্যমন্ত্রীকেও দুই বছর পর বসিয়ে দিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাসবরাজ বোম্বাইকে। প্রসঙ্গত বি এস ইয়েদুরাপ্পা পৃথক পৃথক সময়ে তিন বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু কখনো পূর্ন সময় কাটাতে পারেন নি।
স্বাভাবিক ভাবেই বিপ্লব কুমার দেবের পরিবর্তন নিয়ে বিজেপি শিবির স্বাভাবিক।বিশেষ ভাবে দিল্লি।কারণ বিজেপিতে এটাই রেওয়াজ।অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে। সুতরাং গেরুয়া শিবিরে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিপ্লব কুমার দেবের পরিবর্তন দিনের পর রাত হওয়ার মতোই।যদিও রাজনৈতিক মহল তার পেছনে খোঁজছে নানাহ কারণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *