ডেস্ক রিপোর্টার,২৮জানুয়ারি।।
           ভোট মানেই কালো টাকার পাহাড়। ভোট মানেই টাকার ফুল ঝুড়ি। আগামী ১৬ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচন কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে উড়তে শুরু করেছে কালো টাকা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের স্বার্থে কালো টাকার ব্যবহার শুরু করেছে।নির্বাচন কমিশনের চোখে ফাঁকি দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি ভোটের বাজারে কালো টাকার ব্যবহার করে থাকে। রাজ্যে ও তার ব্যতিক্রম নয়।
            শুক্রবার গোমতী জেলার উদয়পুর থেকে পুলিশ ৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ । আটক করেছে গাড়ি। এই গাড়িতে থাকা লোকজন এই উদ্ধার কৃত টাকার কোন উৎস দেখাতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ এই টাকা সিজ করেছে।পুলিশ- গোয়েন্দা তক্কে তক্কে রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কালো টাকা উদ্ধার করার জন্য। কিন্তু কত অংশ টাকা পুলিশ উদ্ধার করতে পারবে? তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। ১৮ বিধানসভা নির্বাচনেও গোটা রাজ্যে মজুত হয়েছিল প্রচুর পরিমাণ কালো ধন ।পুলিশ গুনা ক্ষরেও আঁচ করতে পারেনি।  এই টাকা মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল ।
           গোয়েন্দার খবর অনুযায়ী, রাজ্যের প্রতিটি জেলা ও মহকুমাতে প্রচুর পরিমাণে কালো টাকা মজুত করা হয়েছে। এই সমস্ত টাকা ভোটের বাজারে খরচ করা হবে। বহির রাজ্য থেকেও আসছে টাকা। ভোটের দাদন হিসেবে সাধারণ মানুষকে দেওয়ার পাশাপাশি নানান উপায়ে এই কালো টাকার ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশ – গোয়েন্দা কালো টাকার উৎস সম্পর্কে কিছুই জানেনা, এটাও ঠিক নয়। অনেক কিছুই তাদের গুচরে রয়েছে।কিন্তু রাজনীতির কারণে তারা এই সমস্ত টাকার থলি গুলিতে স্পর্শ করতে পারছেনা । স্বাভাবিকভাবেই এই কালো টাকা দিয়ে সাধারণ মানুষের ভোট কেনা থেকে শুরু করে অস্ত্র ও বোমা মজুত করা হচ্ছে।
           রাজ্য পুলিশের দাবি, এবারের বিধানসভা নির্বাচন অন্যান্য বারের তুলনায় একেবারেই পৃথক। এবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে খুব ক্লোজ ফাইট হবে । স্বাভাবিকভাবেই ভোটের ময়দানে জয়ী হতে মরিয়া প্রতিটি রাজনৈতিক দল। কোন দল এই বিনা যুদ্ধে জমি ছাড়তে নারাজ। আর এই জমি ধরে রাখতে হলে দেখাতে হবে কালো টাককার আস্ফালন। তাহলেই টিকে থাকা যাবে ভোটের বাজারে।
           গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, নানান ভাবে ভোটের ময়দানে ইতিমধ্যেই প্রচুর পরিমাণ কালো টাকার ব্যবহার শুরু হয়েছে। কোথায়, কারা,কিভাবে এই কালো টাকার ব্যবহার করছে? এই সম্পর্কিত তথ্য রয়েছে গোয়েন্দার কাছেও।  খবর অনুযায়ী সড়ক পথ রেলপথ ও আকাশ পথে রাজ্যে প্রচুর পরিমাণ কালো নোট প্রবেশ করছে। এই সমস্ত কালো নোট উদ্ধারের জন্য জাল বিস্তার করেছে পুলিশ ।নির্বাচন কমিশনও নজর রাখছে পুরো ঘটনার উপর। কিন্তু তারপরও কালো টাকা উদ্ধারের পরিমাণ অনেকটাই কম। ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর সর্বপ্রথম শুক্রবার উদয়পুরে ছয় লক্ষ টাকার কালো ধন উদ্ধার করা হয় । এছাড়াও বিভিন্ন কায়দায় রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা কালো টাকার লেনদেন করছে। কিন্তু পুলিশ এই সমস্ত টাকা উদ্ধার করতে ব্যর্থ। নির্বাচন এখনো আরো বেশ কিছুদিন দেরি। তার আগে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা গোটা রাজ্যে কালো টাকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়ে ভোট বাজারে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করার চেষ্টা করছে।এবং এই কালো টাকা কেন্দ্র করেই নানান জায়গায় ছোটখাটো ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে পুলিশ কালো নোট বহনকারী রাজনীতির কারবারিদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না ।আবার অনেক সময় তাদের কাছে সঠিক তথ্য থাকা সত্ত্বেও দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। কারণ নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে এই মুহূর্তে পুলিশ থাকলেও পরোক্ষ রাজনৈতিকদের লাল চোখ কাজ করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রথম সারির কর্মকর্তাদের উপর।এই কারণেই পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষীদের কাছে অনেক তথ্য থাকা সত্ত্বেও তারা ঝেরে কাশতে পারছেন না।সব মিলিয়ে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে কোটি কোটি কালো নোট উড়তে শুরু করেছে। কোথায়, কারা,কিভাবে এই কালো নোট পাঠাচ্ছেন, তার রহস্য ভেদ করতে গিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে গোটা পুলিশ প্রশাসনকে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, রাজ্যজুড়ে কালো নোটের বহর আরো বাড়তে থাকবে,বলেই মনে করছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *