ডেস্ক রিপোর্টার,৪মে।।
দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে চার কেন্দ্রের উপনির্বাচন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রায় প্রতিদিন পরিবর্তন ঘটেছে রাজ্য রাজনীতির ক্লাইমেক্সে।
গত ১লা মে কৃষ্ণনগর ছাত্র সংঘ ক্লাব এলাকায় দুস্কৃতির আক্রমণে রক্তাক্ত হয়েছেন কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মনের দেহরক্ষী ও গাড়ির চালক। দেহরক্ষীর সার্ভিস রিভিলভার ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুস্কৃতিরা। এই সংক্রান্ত বিষয়ে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি’র বাইক বাহিনীর দিকে।
কৃষ্ণনগরের ঘটনার পর সরাসরি মাঠে নামেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী পশ্চিম থানার পুলিশ তিন অভিযুক্তকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে।তারা বর্তমানে জেল হেফাজতে।তবে তাদের বিরুদ্ধে রিভলভার ছিনতাইয়ের অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
বিরোধীদের বক্তব্য অনুযায়ী, এর আগেও বিজেপি’র বাইক বাহিনী প্রচুর সন্ত্রাস জনিত ঘটনা সংঘটিত করেছে। কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেফতার করার সাহস করতে পারেনি।ঘুরিয়ে বললে শাসক দল অনুমতি দেয়নি। তবে এই কায়দা নতুন নয়।বাম জমানায় এরকম বহু ঘটনার সাক্ষী রয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই বাইক বাহিনীর অন্যান্য ঘটনার ক্ষেত্রেও তাদের পুলিশ গ্রেফতার করেনি।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, তাহলে সুদীপ ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কেন গ্রেফতার করা হলো দলীয় তিন কর্মীকে? তাহলে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব কি সুদীপ রায় বর্মনকে সমীহ করেন? “না”।
রাজনীতিকদের ব্যাখ্যা, পুলিশ-টিএসআরের আস্থা অর্জন করতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত। কারণ এবার বাইক বাহিনীর আক্রমনে রক্তাক্ত হয়েছেন টিএসআর কর্মী রমেশ বিন। তার মাথায় আঘাত লেগেছে।ঝরেছে রক্ত। পুলিশ-টিএসআর কর্মীরা রাজ্যের নেতা-বিধায়ক-মন্ত্রীদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকেন। তাদের সঙ্গে রাম-বাম-কং কিছুই নেই।তারা পালন করে থাকেন নিজেদের পেশাগত দায়িত্ব।
রমেশ বিনের উপর শাসক দলের লোকজনের আক্রমণের ঘটনার বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতে পারে পুলিশ-টিএসআরের মধ্যে। তারা ভেঙে পড়তে পারেন মানসিক ভাবে।আবার কোনো ঘটনায় সংঘবদ্ধ ভাবে জ্বলে উঠতে পারে হিংস্রের ন্যয়।তখন তাদেরকে সামাল দেওয়া কষ্টকর হয়ে উঠবে সরকারের পক্ষে। কারণ সামনে ভোট। পুলিশ-টিএসআরের সঙ্গে পান থেকে চুন খসলেই বিরোধীরা সুযোগ লুঠতে চাইবে। এবং এটাকে কাজে লাগিয়ে সরকারকে চেপে ধরবে।
রাজনৈতিক বিশারদদের বক্তব্য, বিরোধীদের এই সুযোগ দিতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী।এই কারণেই হামলাকারীদের গ্রেফতার করিয়ে পুলিশ-টিএসআর কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন, “নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজনের উপর আক্রমণ হলে মুখ্যমন্ত্রী ছেড়ে কথা বলবেন না।তাতে অবশ্যই পেশাগত কাজ করতে গিয়ে মানসিক ভাবে অনেক জোর পাবেন পুলিশ-টিএসআর কর্মীরা। সম্প্রতি শহরের কামার পুকুর পাড়েও দিন দুপুরে সুদীপ রায় বর্মনের উপর আক্রমণ করেছিলো বাইক বাহিনী।ভেঙে গিয়েছিলো সুদীপের হাত। সেই ঘটনায় তো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ঘটনাস্থল ছিলো মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী ক্ষেত্র। কামার পুকুরে কোনো নিরাপত্তা কর্মী আক্রান্ত হননি কিন্তু। দুই জায়গার ঘটনা বিশ্লেষণ করলেই স্ক্রিপ্ট পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।