ডেস্ক রিপোর্টার,২৯জানুয়ারি।।
                 যখন সুদিন থাকে তখন কাক – পক্ষীর অভাব থাকে না। কিন্তু দুর্দিনে যারা পাশে চুয়াল শক্ত করে দাড়িয়ে থাকে তারাই স্তম্ভ। এই রাজ্যের রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের বহু উঠা-নামা হয়েছে ।বহু নেতা তৃণমূলে এসেছেন,তারা মূলের অমৃত রস খেয়ে আবার ফিরে গিয়েছেন। প্রয়োজনের তাগিদে পুনরায় এসেছেন তৃণমূলে। এবং মূলের রস নিংড়ে নিয়ে ঘরের চার দেওয়ালে বসে গেছেন। আবার পুনরায় রাজনীতির ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে ধরেছেন নতুন ডাল। নতুন বললেও ভুল হবে।তবে পুরানো সুরা নতুন বোতলে রাখলে যা হয়।
      এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস নতুন নয়। ১৯৯৮ থেকে রাজ্যেও তৃণমূলের লড়াই শুরু হয়েছে।কখনো  উত্থান, আবার কখনো পতন। তবে কখনো সাফল্যের চুড়ায় পৌঁছাতে পারে নি। কারণ রাজ্যের মাটিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা যে ঢালে ধরতেন,সেই ডালটি ভেঙ্গে পড়ে যেতো।তাই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে কখনো গাছের মাঝামাঝি জায়গাতেও পৌঁছানো সম্ভব হয় নি।

যুবরাজ নগরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান।

তাই বলে কি তৃণমূলকে ছেড়ে দেওয়া যায়? না, কারণ সন্তান কখনো তার মাকে ছেড়ে যেতে পারে না।রাজ্যের বহু প্রান্তে আজও বহু তৃণমূল কর্মী রয়েছেন সর্ব অঙ্গকে মমতার ‘ মমতা ‘ গ্রাস করে রেখেছে। তাই তারা মমতার বাঁধন ছেড়ে যেতে পারেনি সাদা বাড়ি,লাল বাড়ি বা গেরুয়া বাড়িতে। তারা থেকে যান দিদির আঁচল ধরেই। তারপরও এরাও দুঃখ পান, দলের ভিতর থেকে আসে আঘাত। দাত কামড়ে তা সহ্য করেন। আবার ঘাসফুলকে মনের মনি কঠোরে রেখে চালিয়ে যান কাজ।
           রাজ্যে এখনো এমন তৃণমূল কর্মী রয়েছে।তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। যাদের  আপাদ মস্তক তৃণমূল। তৃণমূল অন্ত প্রাণ।কিন্তু যখন তৃণমূলে কিছু পাখি উড়ে এসে জুড়ে বসেছিল,তখন তৃণমূল অন্ত মানুষ গুলিকে ছেটে দেওয়া হয়েছিল।নেপথ্যে ছিলেন  প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুবল ভৌমিক ও তৃণমূলের সব জানতা(!) ভোট সমীক্ষক সংস্থা আইপ্যাকের ত্রিপুরার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মচারীরা। অথচ আজ দলের দুর্দিনে তাদেরকে পাশে পেলেন মমতা – অভিষেক – রাজীব। পা দেখিয়ে চলে গেলেন সুবল এবং তার সঙ্গে থাকা গুটি কয়েক অনুগামী।

খান্নার নেতৃত্বে পাহাড়ে সক্রিয় তৃণমূল

রাজ্যের তৃনমূল কংগ্রেসের রক্ত বীজ সম্পন্ন কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন উত্তর জেলার যুবরাজ নগরের রত্নেশ্বর নাথ। উনকোটি জেলার চণ্ডীপুরের বিদ্যুৎ সিনহা। ধলাইয়ের ছাওমনুর খান্না মারাক, আমবাসার চন্দন মগ, সাব্রুমের নন্দী গ্রামের বেচারাম, রাজধানীর নীল কান্ত সিনহা,কহেলি দাস, বিলোনিয়ার প্রশান্ত সেন, ধনপুরের মোঃ জহির উদ্দিন সহ আরো অসংখ্য নাম রয়েছে এই তালিকায়। যারা নিজের ঘাটের  পয়সা খরচ করে দিনের পর দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বুকে নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস করছে। এবং ঘাসফুলের ঝান্ডা তুলে ধরে রেখেছে।যখন হাওয়া আসে তখন তাদের ব্রাত্য করে রাখা হয়।

চণ্ডীপুরে সাবলীল বিদ্যুৎ

কর্মীদের অভিযোগ,তার পেছনে কল কাঠি নাড়ছে আই – প্যাকের কর্মচারীরা।তাও তো মাসের শেষে বেতন না পেলে চাকরিটা ছেড়ে দেবেন।তখন তৃণমূলের হয়ে সমীক্ষা করবে না।তাহলে  নুন আনতে পান্তা ফুরা়নোর মত অবস্থায় থাকা রত্নেশ্বর নাথ, বিদ্যুৎ সিনহা,খান্না মারাক, চন্দন মগ, বেচারামরা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি একশ শতাংশ দায়বদ্ধ। তারা বরাবর তৃণমূলের জন্য কাজ করছে ডেটিকেটেড ফোর্স হিসেবে।

লাল পাহাড়ে তৃণমূলের মিছিল।

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট নেতারা নিজের ঘাটের পয়সা খরচা করে বিভিন্ন দিকে মিছিল মিটিং করছেন ।পরিধি বড় না থাকলেও তাদের অবস্থানে দাঁড়িয়ে দিচ্ছেন সেরাটা উজার করে। শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিকে সামনে রেখে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতার কথার উপর আস্থা রেখে।স্বপ্ন, হয়তো বা একদিন ত্রিপুরার মাটিতেও মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াবে তৃণমূল। রাজ্য রাজনীতিতে কয়েকবার তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এই সুযোগ এসেছিল।কিন্তু তৃণমূল তা ধরে রাখতে পারেনি।অব্যশই তৃণমূল নেত্রী মমতা তার দলের ল্যাবরেটরিতে ত্রিপুরাকে নিয়ে পোস্টমর্টেম করেছেন। হাতে পেয়েছেন রিপোর্টও।
             রাজনীতিকরা আশা করছেন, ২৩ র ভোট ময়দানে তৃণমূল কংগ্রেসের জাঁদরেল সেনানী রত্নেশ্বর,খান্না,বিদ্যুৎ ,চন্দন ,নীলকান্ত ,প্রসেনজিৎ সহ অন্যান্যরা সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন অন্তত দলকে বাঁচাবেন লজ্জার হাত থেকে। অথচ দলে আশা দুই দিনের অতিথির রা তৃণমূলকে গড্ডায় ফেলে দিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য লাফাচ্ছে নানান গাছের ডালে ডালে।
             

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *