ডেস্ক রিপোর্টার,৮এপ্রিল।।
রাজ্যের সবচেয়ে বড় আর্থিক ঘোটালা পূর্ত কেলেঙ্কারি। অবশেষে থানায় কেলেঙ্কারির মামলা রুজু হওয়ার ৩১ মাস পর আদালতে চার্জশিট জমা করলো ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ভোটের বছরে পূর্ত কেলেঙ্কারির চার্জশিট আদালতে জমা পড়ার ঘটনা রাজনৈতিক ভাবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। শেষ পর্যন্ত রাজ্য পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ আদালতে চার্জশিট জমা করে রক্ষা করেছে নিজেদের মান। একই সঙ্গে সিপিআইএম নেতা পবিত্র করের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির মামলার চার্জশিটও জমা করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। খবর আদালত সূত্রের।
২০১৯-র ১৩ অক্টোবর ছয়শ আটত্রিশ কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকার কেলেঙ্কারির দায়ে প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরীকে মূল অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছিলো ভিজিলেন্স।এই মামলায় অপর দুই অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্য সচিব ওয়াইপি সিং ও প্রাক্তন মুখ্য বাস্তুকার সুনীল ভৌমিক।পুলিশ প্রথমেই গ্রেফতার করে সুনীল ভৌমিককে। এরপর গুরুত্ব বুঝে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া ক্রাইম ব্রাঞ্চকে।এই সময়ের মধ্যে প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরী রহস্য জনক ভাবে পালিয়ে যান।যদিও পরবর্তী সময়ে আই এল এস হাসপাতাল থেকে তাকে গ্রেফতার করে ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ। রাজ্যে প্রাক্তন মুখ্য সচিব ওয়াই পি সিংকে অনেক জল ঘোলার পর উত্তর প্রদেশ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে বাদল চৌধুরী, ওয়াইপি সিং ও সুনীল ভৌমিক তিন জনই আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে যান নিয়ম অনুযায়ী।
ক্রাইম ব্রাঞ্চ দাবি করেছিল খুব শীঘ্রই তদন্ত শেষ করে আদালতে মামলার চার্জশিট জমা করবে। অনেক জল ঘোলার পর বৃহস্পতিবার
ক্রাইম ব্রাঞ্চ আদালতে চার্জশিট জমা করে।
উচ্চ আদালত আগেই এই মামলা থেকে দুইটি ধারা বাতিল করে দিয়ে গোটা মামলাটিকেই গুরুত্বহীন করে দিয়েছিলো।ক্রাইম ব্রাঞ্চের খবর অনুযায়ী, পূর্ত মামলার তদন্তের জন্য ক্রাইম ব্রাঞ্চ বিভিন্ন স্তরের অফিসারদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলো।এই কমিটিতে আইজি থেকে শুরু করে ইন্সপেক্টর স্তরের অধিকারিকরাও ছিলেন।
ক্রাইম ব্রাঞ্চ দাবি করেছিল খুব শীঘ্রই তদন্ত শেষ করে আদালতে মামলার চার্জশিট জমা করবে। কিন্তু অনেক জল ঘোলার পর বৃহস্পতিবার ক্রাইম ব্রাঞ্চ আদালতে চার্জশিট জমা করতে সক্ষম হয়েছে। উচ্চ আদালত আগেই এই মামলা থেকে দুইটি ধারা বাতিল করে দিয়ে গোটা মামলাটিকেই গুরুত্বহীন করে দিয়েছিলো।ক্রাইম ব্রাঞ্চের খবর অনুযায়ী, পূর্ত মামলার তদন্তের জন্য ক্রাইম ব্রাঞ্চ বিভিন্ন স্তরের অফিসারদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলো।এই কমিটিতে আইজি থেকে শুরু করে ইন্সপেক্টর স্তরের অধিকারিকরাও ছিলেন।
রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব দিল্লী, মুম্বাইয়ের আদলে রাজ্যে ক্রাইম ব্রাঞ্চ তৈরি করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিলো ক্রাইম ব্রাঞ্চের মাধ্যমে রাজ্যে কমানো হবে অপরাধ।মুখ্যমন্ত্রী স্বপ্নের ক্রাইম ব্রাঞ্চ তৈরি করেছেন ঠিকই,কিন্তু রাজ্যের সবচেয়ে বড় আর্থিক মামলার রহস্য ভেদ করে চার্জশিট জমা করতে ক্রাইম ব্রাঞ্চের সময় নিয়েছে দীর্ঘ ৩১মাস।
সিপিআইএম নেতা পবিত্র করের বিরুদ্ধেও আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি থাকার মামলা দায়ের করেছিলো ভিজিলেন্স। পরবর্তী সময়ে মামলার তদন্ত বর্তেছিলো ক্রাইম ব্রাঞ্চের উপর। ক্রাইম ব্রাঞ্চ দফায় দফায় পবিত্র করকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলো।অবশেষে তদন্ত শেষে এদিন পবিত্র করের মামলার চার্জশিটও জমা করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
আইন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী, তদন্তকারী পুলিশের তদন্তের ব্যর্থতার জন্য অভিযুক্তরা আইনের মারপ্যাঁচ থেকে প্রাথমিক ভাবে রেহায় পেয়ে যান।। তদন্তের শুরুতে ভুল পথে পরিচালিত হয়েছিলো পুলিশ। এই কারণেই এখন পর্যন্ত মামলার চার্জশিট জমা করতে এতো টা সময় লেগে গিয়েছিলো। অভিযুক্তদের প্রথমে পৃথক ভাবে এবং পরে এক সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করেও মামলার তদন্তের নির্যাস উন্মোচন করতে অনেকটা সময় ব্যয় করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ।পরিসংখ্যান বলছে রাজ্যে ক্রাইম ব্রাঞ্চ গঠনের পর আজ পর্যন্ত বড় মামলাগুলির রহস্য উন্মোচনের পুলিশের অপরাধ দমন শাখার সাফল্য প্রায় শূন্যের কোটায়। তবে দেরিতে হলেও পূর্ত মামলার চার্জশিট জমা করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ নিজেদের মান কিছুটা পুনরুদ্ধার করেছে বলেই মনে করছেন আইনের বিশ্লেষকরা।