ডেস্ক রিপোর্টার, ১৬জানুয়ারি।।
    টিংকু রায়। তিনি  ভারতীয় জনতা পার্টির ত্রিপুরা প্রদেশের সাধারণ সম্পাদক।১৮- র নির্বাচনের আগে টিংকু রায়ের কোনো অস্তিত্ব ছিলো না রাজ্য রাজনীতিতে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের হাত ধরে তিনি সুদূর দিল্লিতে রাজনীতির বাণিজ্যের ঝাঁপ খুলে রাজ্যে আসেন। তখন তিনি ছিলেন রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি।
       ১৮ – র নির্বাচনে প্রবল বাম বিরোধী হাওয়া ও মোদী ঝড়ের মধ্যেও টিংকু রায় রাজ্য রাজনীতিতে দাগ কাটতে পারেন নি। কুর্তি – কদমতলা বিধানসভা থেকে তিনি বিজেপির টিকিটে দাড়িয়েও পরাজিত হয়েছিলেন।তাও বিজেপির সর্ব ভারতীয় নেতৃত্ব তাকে প্রথম দফায় টিকিট দেয় নি।কারণ তারা বুঝে ছিলেন টিংকু রায়ের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কোনও মুরুদ নেই।যদিও শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে টিকিট আদায় করেছিলেন তিনি। বিজেপির রাজনীতির অন্দরে  একথা বহু চর্টিত।
       রাজ্যের মানুষ আজও বিজেপির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি আস্থাশীল।আস্থা রয়েছে  নিষ্কলুক মুখ্যমন্ত্রী
ডা: মানিক সাহার উপর।প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী ফের নতুন দিশা দেখবেন রাজ্যকে।এটাও বিশ্বাস করেন রাজ্যের মানুষ।
ভারতীয় জনতা পার্টির মধ্যে যখন টিংকু রায়ের মত দুর্নীতির অক্টোপাসে জড়িত ধান্ধাবাজ নেতার মুখ দেখে মানুষ,তখন প্রশ্ন তুলতে শুরু করে। তার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। লোকমুখে শোনা যায়,  টিংকুর রায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা টেনেটুনে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত।প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডিও পেরোতে পারেন নি  টিংকু। কিন্তু তিনি নিজেকে দ্বাদশ শ্রেণী উত্তীর্ণ বলে দাবি করে থাকেন। এটা তার নিজস্ব বিষয়। তবে টিংকুর দ্বাদশ মান উত্তীর্ণ স্কুল সার্টিফিকেট নিয়েও  বিতর্ক রয়েছে। যাক এসব কথা।ভোটের মুখে বিজেপির  কর্মীরা জানতে চায় টিংকুর দুর্নীতির উপাখ্যান।
টিংকু বর্তমানে রাজ্য শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান।দুর্নীতির কারণে তার চেম্বারে ঝুলছে তালা।এখন তিনি শিল্প নিগমের গাড়ি নিয়েও চলেন না।তাকে তাড়া করছে ভয়।বিজেপি সরকারের জামানায় বহু
যুবকের ভবিষ্যত নষ্ঠ করেছে টিংকু।সিপিডাব্লিউডি থেকে হাউজিং বোর্ড সহ নিগোসিয়েশনের প্রতিটি ক্ষেত্রে টিংকুর হাত।তোলা বাবদ আদায় করছেন কমিশন।টিংকুর অপরাধ বাণিজ্যের বহু কথোপকথনের অডিও-ভিডিও রেকর্ড রয়েছে দলীয় লোকজনের কাছে ।ভোটের মুখে যেকোনো সময় তা হতে পারে ফাঁস।


বিজেপির কর্মীদের বক্তব্য, দলের ভিতরেও অর্থিক দুর্নীতি করছেন টিংকু। কৃষ্ণনগর গেরুয়া বাড়িতে পা রাখলেও বিজেপির কর্মীরা উগলে দেয় ফাইভ পাশ টিংকুর নতুন দুর্নীতির উপাখ্যান। তা আবার কিভাবে? ব্যাখ্যা দিয়েছে বিজেপির সৎ নিষ্ঠাবান কর্মীরা।
   সাধারণ সম্পাদক টিংকু রায় এই মুহূর্তে
প্রদেশ বিজেপির বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কমিটির চেয়ারম্যান। এই কমিটির তত্ত্বাবধানে প্রতিটি জেলাতে হচ্ছে বিজেপির প্রাসাদ সমেত অফিস।
পার্টি অফিসের জন্য জমি ক্রয় থেকে শুরু করে নানান বিল্ডিং সামগ্রী ক্রয়, সবেতে টিংকুর হাত।
পার্টি অফিসের জমি ক্রয়ে টিংকু কমিশন নিয়েছেন ১০শতাংশ।বাদবাকি বিল্ডিং সামগ্রী ক্রয় থেকে
পেয়েছেন পাঁচ শতাংশ কমিশন।বিজেপির নিষ্ঠাবান কর্মীরা টিংকু রায়ের এই দুর্নীতি নিয়ে সরব হচ্ছেন।ভোটের মুখে হতে পারে বিস্ফোরণ। জনমনে ফাইভ পাশ টিংকুর অবস্থান কেমন?
কর্মীদের কথায়,সম্প্রতি টিংকু রায় গিয়েছিলেন দূর্গা চৌমুহনীতে। নেতা বলে কথা,রাস্তার মধ্যেই রেখেছিলেন টিংকুর গাড়ি। উপস্থিত লোকজন গাড়িটিকে সরানোর দাবি করে। এবং টিংকুকে বিশ্রী গালাগাল দিয়ে গাড়িতে সরাতে বাধ্য করে। দাপুটে নেতা টিংকুর এই অসহায় অবস্থা দেখে উপস্থিত লোকজন হাত তালি দেয়। এবার বুঝুন দুর্নীতিবাজ টিংকুর জনপ্রিয়তা কোন জায়গায় ঠেকেছে? বিজেপির কর্মীরা বলছেন,২৩ র নির্বাচনে টিংকু টিকিট পেলেও তার পরাজয় নিশ্চিত।
নেতা টিংকু রায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটা ? ধর্মনগরের মানুষ তা জানেন। টিংকু রায় প্রাথমিক স্কলের গণ্ডি পেরুতে পারেন নি। তাতে কিছু আসে যায় না। কিন্তু টিংকু রায় ১৮ র ভোটে তার প্রার্থীর জমা করা হলফ নামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়েছিলেন টুয়েলভ পাশ।কোন বোর্ডের সার্টিফিকেট দিয়েছেন?



টিংকু রায় নির্বাচন কমিশনের জমা করা হলফ নামায় জানিয়েছেন, ২০০৪ সালে তিনি মধ্য ভারত গোয়ালিয়র বোর্ড থেকে টুয়েলভ পাশ করেছেন।
  আদৌ কি মধ্য ভারত গোয়ালিয়র বোর্ডের কোন অস্তিত্ব আছে? না,গুগলসে গিয়ে সার্চ করলেই স্পস্ট চিত্র ফুটে উঠবে যে  মধ্য ভারত গোয়ালিয়র বোর্ড সম্পূর্ণ ফেক।
  মধ্য ভারত গোয়ালিয়র একটি স্বীকৃত বোর্ড নয়। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলি তাদের কোর্সে ভর্তির জন্য এই বোর্ডটিকে বিবেচনা করে না। “শিক্ষা” নামক একটি এডুকেশন সাইটে তা স্পষ্ট ভাবে বলে দেওয়া হয়েছে।

ধর্মনগর ডিগ্রি কলেজের অনুষ্ঠানে টিংকু

রাজ্যের মানুষ বুঝতে পেরেছে টিংকু রায় আপদমস্তক একজন দুর্নীতিবাজ।এই টিংকুই নাকি এখন মঞ্চে উঠে মানুষকে নীতি কথা শুনান। সম্প্রতি এই ফাইভ পাশ করা নেতা টিংকু আবার ধর্মনগর ডিগ্রী কলেজের অনুষ্ঠানের মঞ্চে শোভা বর্ধন করে বসে ছিলেন। তাও আবার মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছি: ছি:।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *