*তেলিয়ামুড়া থেকে রাহুল পাল*
——————————————–
সমাজের দরিদ্র অংশের মানুষের জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প চালু রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রকল্পগুলি কে উপযুক্তভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য রয়েছে বিশাল আমলা বাহিনী। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে একাংশ দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক সহ কর্মীদের বদান্যতায় সমাজের প্রকৃত দরিদ্র অংশের মানুষজন সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী একাংশ জনজাতি অংশের মানুষজনদের দুঃখের দিন এখনও শেষ হয়নি। আবারো চির বঞ্চিত একটি হতদরিদ্র রিয়াং পরিবারের করুণ কাহিনী উঠে এলো তেলিয়ামুড়া মহকুমার মুঙ্গিয়াকামী আর.ডি ব্লকের অধীনস্থ নুনাছড়া এডিসি ভিলেজের হামপাইলা এলাকা থেকে। এই এলাকায় বসবাসকারী এক হতদরিদ্র দিব্যাঙ্গ উপজাতি জুমিয়া হলেন বীরকুমার রিয়াং। এই পরিবারটির সংসার প্রতিপালনের সহায় সম্বল হলো জুমচাষ করা এবং বনের লতা-পাতা সংগ্রহ করে সেগুলিকে বাজারজাত করে নিজেদের দিনাতিপাত করা। এই উপজাতি রিয়াং পরিবারটির গৃহকর্তা হলেন বীর কুমার রিয়াং। তিনি আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো জুম চাষ কিংবা লতা পাতা সংগ্রহ করতে খানিকটা বেগ পেতে হয়। কারণ তিনি দিব্যাঙ্গ। এমনকি সরকারি রেশন কার্ডটি ও বিপিএলের পরিবর্তে সরকারিভাবে এপিএল-ই রয়েছে। এ ব্যাপারে বলতে গিয়ে বীর কুমার অভিমত তুলে ধরেন, সরকারের কাছে আমি দরিদ্র নয়। তাই সরকার বাহাদুর তাই পরিবারের রেশন কার্ডটি বিপিএল এর পরিবর্তে এ পি এল এর কোঠায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মৌলিক অধিকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গুলি থেকে বঞ্চিত এই পরিবারটি। স্বামী স্ত্রী সহ কন্যা সন্তানটি জুমচাষ কিংবা বনলতা কুড়িয়ে সংসারের প্রতি পালন করে আসছে অনেক বছর ধরে। তারপরও তার দিন ফিরেনি এখন‌ও। চেয়েছিল একটি বসতঘর। তাও তার ভাগ্যের পরিহাস এর খাতায় লিপিবদ্ধ হয় নি। ফলে তাই সে তার পরিবার সমেত বাঁশপাতা ঘরের ছাউনির নিচে দিন গুজরান করে আসছে। কারণ বর্তমানে প্রত্যন্ত এলাকায় গুলিতে বাস থাকলেও ছন এরপরিমাণ হ্রাস পাওয়াতে এলাকার বেশিরভাগ মানুষ এই ছন এর পরিবর্তে ব্যবহার করছে বাঁশপাতা। এখন দেখার বিষয় সরকার সেই পরিবারটির দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, না কি ওই পরিবারকে সরকারি বিভিন্ন সাহায্য হাত বাড়িয়ে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *