তিপ্রামথার আস্ফালন।পুড়ছে রেবতী ত্রিপুরার কুশ পুতুল।

ডেস্ক রিপোর্টার,১৬জুন।।
জনজাতি কল্যান মন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া, সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা ও বিজেপি প্রদেশ সহ সভানেত্রী পাতালকন্যা জমাতিয়ার উপর পাহাড়ে ধারাবাহিক আক্রমণ নিয়ে জনজাতি অংশের সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে জমাতিয়া সমাজ ও ত্রিপুরা জনজাতি জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ এধরণের আক্রমণ মেনে নিতে পারছেনা। সিপিআইএম, বিজেপি এমন কি তিপ্রামথারও একাংশ সাধারণ সমর্থক অবরোধ ও হামলার রাজনীতি পাহাড়ে সংক্রমিত হওয়ার জন্য উদ্বিগ্ন।। মন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া ও বিজেপি সহ-সভানেত্রী পাতালকন্যা জমাতিয়ার উপর পর পর হামলা ও আক্রমনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে জমাতিয়া সমাজেও।সামাজিক ভাবে প্রতিদিন ঝড়ের বিস্তার লাভ করছে। একই উদ্যােগ চলছে ত্রিপুরা সমাজের মধ্যেও। একাংশ সামাজিক নেতা এনিয়ে তত্পরতা শুরু করেছেন।

সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা ও মন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া।(ফাইল ছবি)।

বর্তমান রাজ্যের জনজাতি কল্যান মন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া সরাসরি রাজনীতিতে আসার আগে জমাতিয়া হদার গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। এখনো জমাতিয়া হদার নিয়ন্ত্রক বলা যায়। জমাতিয়া হদার গোটা জমাতিয়া সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে থাকে।। হিন্দু থেকে খ্রিষ্টান ধর্মে জনজাতিদের ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রবনতাকে ঠেকাতে মরিয়া চেষ্টা চালান জমাতিয়া হদা। জমতিয়া হদার গুরুত্বপূর্ণ নেতা রামপদ জমতিয়া
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের রাজ্য কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।বর্তমানে তিনি রাজ্যের জনজাতি কল্যান মন্ত্রী। পাহাড়ে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় থেকেই রামপদ জমাতিয়াকে একাংশ জাতি বিদ্বেষী শক্তি টার্গেট করে। বিধায়ক হওয়ার পরও তিনি একাধিক বার আক্রান্ত হন। তাঁর গাড়িতে হামলা সংঘটিত করা হয় একাধিক বার। জাতি বিদ্বেষী শক্তি যখন রাজ্য জাতি জনজাতির মধ্যে বিদ্বেষ তৈরি করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে, রামপদ জমাতিয়া এই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন বার বার। মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ার পর সম্প্রতি জম্পুই জলা, তৈদু, মোহনপুর মহকুমায় আক্রান্ত হন তিনি। কিন্তু কেন?
সমাজের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ জন আজ পাহাড়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, রাজনীতি করা প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। বুবাগ্রা যদি কংগ্রেস দল থেকে পদত্যাগ করে তিপ্রামথার মতো দল করতে পারেন, তবে কেন পাতালকন্যা জমাতিয়া টিপিএফ থেকে বিজেপিতে সামিল হয়ে রাজনীতি করতে পারবেনা? এটা কোন ধরনের মতাদর্শ বুবাগ্রার? তাছাড়া আজ গোপনে কংগ্রেস দলের সাথে আঁতাত করেছে মথা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে , কংগ্রেস কি গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবি নিয়ে মথার সাথে মিলে লড়াই করবে আগামী দিনে? যেখানে বুবাগ্রা মঞ্চে উঠলেই বলেন, গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড নিয়ে কোন আপোস নয়। সেখানে কোন চুক্তির ভিত্তিতে কংগ্রেসের সাথে উপনির্বাচনে গোপন আঁতাত? এই প্রশ্নে কিন্তু ক্রমশ স্পর্শ কাতর হয়ে উঠছে পাহাড়।

পাতালকন্যা জমাতিয়া(ফাইল ছবি)।

গন্ডাছড়া, গঙ্গানগর, মনু, ছাওমনু সহ ধলাই জেলার একটা বড় অংশে আবার সাংসদ রেবতী ত্রিপুরার উপর পর পর আক্রমণকে মেনে নিতে পারছেনা। বলা বাহুল্য, পাহাড়ের ত্রিপুরা জনজাতি সমাজের একটা বড় অংশের মধ্যে সাংসদ রেবতী ত্রিপুরার জনপ্রিয়তা রয়েছে। অনেকে সমাজের গর্বও মনে করেন। বিজেপি -আইপিএফটি সরকার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর গন্ডাছড়ায় সাংসদের পৈত্রিক বসতবাড়ি আক্রান্ত হয়। অগ্নি সংযোগ হয় বাড়িতে। বিপ্লব কুমার দেব তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ দপ্তরেরও মন্ত্রী। কিন্তু আক্রমণ ও হামলাকারীদের একজনকেও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। এনিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু সুরাহা হয়নি। আজ অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, সেদিনের আক্রমণ এবং সাম্প্রতিক কালে পর পর আক্রমণের ঘটনার কোন সংযোগ রয়েছে কিনা, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে পাহাড়ে। ফলে মথার শুরু করা অবরোধের রাজনীতি আগামী দিনে গোটা পাহাড়ে কিন্তু বড় ধরনের অশান্তি তৈরি করতে পারে। এমনই আভাস পাওয়া যাচ্ছে পাহাড়ের বিভিন্ন মহল থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *