ডেক্স রিপোর্টার, ২৮ আগষ্ট।।
           মুখ্যমন্ত্রীকে ঘুমে রেখে আইটি দপ্তরে দুর্নীতির নীল নক্সা।ঘুমে আছেন দপ্তরের মন্ত্রী প্রনজিত সিংহ রায়।সরকারী দপ্তরে ই-ফাইলের নামে আইটিতে মেলেছে দুর্নীতিবাজদের ডানা।দুর্নীতির উপপাদ্য কম্পিউটার ক্রয় সংক্রান্ত “টেন্ডার”।
ডিজিটাল ভারতের অঙ্গ হিসাবে রাজ্য সরকার সরকারী দপ্তরগুলিকে ই- অফিস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ই- অফিসে থাকবে  ই-ফাইলের ব্যবস্থা।
সমস্ত সরকারী দপ্তরের নথিপত্র  ডিজিটাল সিস্টেমে মজুত রাখার জন্যই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত।


তার জন্য প্রয়োজন হাই কনফিগারেশনের কম্পিউটার। সরকারী দপ্তরে ই- অফিসের  ই – ফাইলিং-র জন্য কম্পিউটার ক্রয়ের দায়িত্ত্ব দেওয়া হয়েছিলো আইটি ডিপার্টম্যান্টকে। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে আটশ “অল ইন ওয়ান” কম্পিউটার ক্রয় করবে দপ্তর। গত ১৬ আগস্ট আইটি দপ্তর কম্পিউটার ক্রয়ের জন্য টেন্ডারও আহ্বান করেছে।  টেন্ডার নম্বর: 18(72)/DIT/eOffice (Proc)/2023।


আইটি ডিপার্টম্যান্টের আহ্বান করা টেন্ডারের টেকনিক্যাল শর্তগুলি থেকেই আতশ কাচের নিচে স্পস্ট হয়ে উঠছে দুর্নীতি। এই শর্ত মোতাবেক কমপিউটার প্রস্তুতকারক বড় বড় কোম্পানিগুলিও টেন্ডারে অংশ গ্রহন করতে পারবে না।দাবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার লোকজনের। বিশেষজ্ঞদের কথায়, রাজ্য আইটি দপ্তরের এই টেন্ডারে অংশ গ্রহনের জন্য উপযুক্ত আমেরিকা ভিত্তিক একটি কম্পিউটার প্রস্তুতকারক সংস্থা। এই সংস্থার কথা মাথায় রেখেই আইটি ভবনের রাঘব বোয়ালরা টেন্ডারে টেকনিক্যাল শর্ত আরোপ করছে।


দেশে অবস্থানরত আমেরিকা ভিত্তিক  কম্পিউটার প্রস্তুত কারক সংস্থাটির সদর দপ্তর ব্যাঙ্গালুরুতে। শোনা যায়, এই সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে নাকি আগে থেকেই সম্পর্কের সলতে পাকিয়ে নিয়েছেন আইটি ভবনের কুশীলবরা। এমনই গুঞ্জন ইনফরমেশন টেকনোলজি চত্বরে।


গোটা দুর্নীতি চক্রের সঙ্গে আইটি ভবনের কারা কারা জড়িত থাকতে পারেন? আইটি ভবনের অন্দর মহলের খবর, সন্দেহের তীর দপ্তরের অধিকর্তা নরেশ বাবু। অতিরিক্ত অধিকর্তা সুপ্রকাশ জমাতিয়া ও নোডাল অফিসার ফিলিপ জমাতিয়ার দিকে। আইটি দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা সুপ্রকাশ জমাতিয়া যে কত বড় গুণধর, তা  জানেন এই রাজ্যের মানুষ। তার রয়েছে প্রচুর দুর্নীতির উপাখ্যান।

।।অধিকর্তা নরেশ বাবু ও অতিরিক্ত অধিকর্তা সুপ্রকাশ জমাতিয়া।।

টেন্ডার অনুযায়ী, ই – ফাইলের জন্য ” অল ইন ওয়ান” কম্পিউটার ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইটি দপ্তর। বিশেষজ্ঞদের কথায়,  বহু আগেই দেশের বিভিন্ন রাজ্য এবং বড় বড় বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান  “অল ইন ওয়ান” কম্পিউটারকে অচল মুদ্রার মতো টেকনোলজির কুড়ের ঘরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।তারা এখন পুনরায় নরমাল কম্পিউটার সিস্টেমকে ব্যবহার করছে কার্যক্ষেত্রে।


কম্পিউটার বাজারের তথ্য অনুযায়ী, ” অল ইন ওয়ান” সিস্টেমের প্রতিটি কম্পিউটারের সর্বোচ্চ দাম প্রায় আশি হাজার টাকা। এর চেয়ে অনেক কম দামেরও রয়েছে। কাজ একই। কিন্তু আমেরিকা ভিত্তিক কোম্পানিটি আশি হাজার টাকার দামের কম্পিউটারই  আইটিকে সরবরাহ করবে বলে জানা গেছে। কারণ টেকনিক্যাল শর্ত মোতাবেক অন্য কোনো কম্পিউটার প্রস্তুত কারক সংস্থা টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করতে পারবে না।স্বাভাবিক ভাবেই আইটি ভবন কম্পিটার ক্রয়ের নামে সরকারী অর্থের যে আদ্য শ্রাদ্ধ করবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।


কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়াররা বক্তব্য, অল ইন ওয়ান কম্পিউটারে একটি চিপ নষ্ট হলেই গোটা সিস্টেম বিকল হয়ে পড়বে। তখন থুবড়ে পড়বে গোটা ই- অফিসের কাজকর্ম। এই সিস্টেম ঠিক করার জন্য আনতে হবে সার্টিফাইড ইঞ্জিনিয়ারকে। তাতে সার্ভিসের ক্ষেত্রেও সরকারকে দ্বিগুণ টাকা গুনতে হবে। রাজ্যের আইটি দপ্তরের আধিকারিকরা এটা জানেন না,এমনটা নয়। অভিযোগ, তারা নাকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ঘুমে রেখে উপরি রোজগারের জন্য কাগজে কলমে সরকারী কোষাগার লুঠ করার পরিকল্পনা নিয়েছে।  গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পুনারায় খতিয়ে দেখলে পাহাড় সমান দুর্নীতির হাত থেকে বেঁচে যাবে রাজ্য সরকার।কারণ আমেরিকান কোম্পানিটি রাজ্যকে ওয়ান ইন কম্পিউটার দিয়ে প্রথম ধাপে হাতিয়ে নেবে প্রায় ৫কোটি টাকা। তার চেয়ে আরো কম টাকায় রাজ্য সরকার সরকারী দপ্তরে ই – ফাইলের ব্যবস্থা করতে পারে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *